অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
‘ঘরের দরজায় আইসা আপা পেসার (রক্তচাপ) মাপে, ডায়বেটিস পরীক্ষা করে। মেয়েরারে চাকরিবাকরি করতে কত বুদ্ধি-পরামর্শ দেয়। ট্যাহা-পয়সা নেয় না। বাজারে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে ট্যাহা লাগে, তথ্য আপা বাড়ি বাড়ি আইয়্যা মাগনা করে।’ বলছিলেন আয়েশা বেগম (৩৫)। তিনি অষ্টগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলমদীঘির পাড়ে বাস করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছে এ প্রকল্প।
প্রত্যন্ত গ্রামের উঠান বৈঠকে নারীদের জীবন ও জীবিকা, বাল্যবিবাহ, ফতোয়া, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাকরিবিষয়ক তথ্য, আইনগত সমস্যা ও প্রযুক্তির সুবিধা বিষয়ে অবহিত করেন। পারিবারিক সহিংসতা, নারীনীতি ও যৌতুক নিরোধ সচেতনতা বাড়াতে মুক্ত আলোচনা করা হয়। বিনা মূল্যে দেওয়া হয় যাবতীয় ইন্টারনেট সেবা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তথ্য আপার মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু হয়। অতিমারি করোনাকালীন এই সেবা বন্ধ থাকে। সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় এ সেবা কার্যক্রম চালু হয়। চলতি মাসের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৪ জনসহ ১ হাজার ১০০ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়ায় জুনু রানী বণিক (৪৩), হুসনেআরা বেগমের (৪৭) ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও রক্তচাপ মাপছেন সহকারী তথ্য কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার। নানা বিষয়ে মুক্ত আলোচনা করছেন উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা সানজিদা হক চুমকি। এ সময় বহু নারীকে আগ্রহ নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
কলেজছাত্রী মীম আক্তার বলেন, ‘বাজারে কম্পিউটার সেন্টারে গিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে না। তথ্য আপার এখানে স্বাস্থ্য ও ডিজিটাল সেবা বিষয়ে পরামর্শ নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তা ছাড়া টাকাপয়সাও লাগে না।’
উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা সানজিদা হক চুমকি বলেন, ‘নারীদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা ও বিভিন্ন সরকারি সেবা সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের দোরগোড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য তথ্য আপা কাজ করছে।’