ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
‘মাত্র ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে অসুস্থ ভাইয়ের চিকিৎসা ও বৃদ্ধা মাসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের ভরণপোষণ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর ঋণের কিস্তি। কিন্তু ট্রাফিক সার্জেন্ট রুবেল ইসলাম আমাকে পাঁচ মিনিট সময় দেননি। কীভাবে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দেব!’
ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় গত শনিবার সন্ধ্যায় আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিপণনকর্মী সবুজ রানা।
এই তরুণ জানান, শনিবার বিকেলে মেঘলা আকাশ দেখে তিনি অফিসের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। পথে শহরের চৌরাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ তাঁকে থামায়। এ সময় তাঁর কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। তড়িঘড়ি করে অফিস থেকে বের হতে গিয়ে তিনি লাইসেন্সের কাগজ নিতে ভুলে যান। তিনি অফিস থেকে লাইসেন্সটি আনতে পাঁচ মিনিট সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট তাঁকে সুযোগ না দিয়ে মামলা দেন।
রানা বলেন, ‘সার্জেন্টকে বলেছিলাম ৫ হাজার নয়, আপনি যদি ৫০০ টাকাও জরিমানা করেন, সেটি দেওয়ার সামর্থ্যও আমার নেই। কিন্তু তিনি কোনো কথাই শুনলেন না। পরে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় গাড়িটি নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।’
রানার বাড়ি সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের ভেলারহাট গ্রামে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রোমান বাদশা বলেন, ‘পুলিশ মানবিকতার পরিচয় না দিয়ে উল্টো জরিমানাসহ মামলা দিয়েছে। বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করব।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আমজাদ হোসেন বলেন, ‘মোটরসাইকেলের চালক রানার কাছে ওই সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। তিনি যদি সঠিক কাগজপত্র নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে দেখাতে পারেন তাহলে তাঁর জরিমানা মওকুফ হতে পারে। আর যিনি জরিমানা করেছেন তাঁর বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হতে পারে।’