নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
কোর্ট হিল নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব যেন শেষ হওয়ার নয়! গতকাল রোববার আইনজীবী সমিতি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ করতে গেলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ওয়াসার কর্মকর্তা তাতে বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জেলা প্রশাসন, আইনজীবী সমিতি ও ওয়াসার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে অ্যানেক্স ভবন–১ এর সামনে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত শুক্রবার সেখানে ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা এরফানুল করিম সাজ্জাদ। তাঁর সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেটও সেখানে যান। পরে এরফানুল ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, সেখানে ১১শ ফুট গভীর ও চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধের নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে। তখন এরফানুল আইনজীবী সমিতির কাছে অনুমতি না নিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপনের কারণ জানতে চান। তবে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, নতুন নয়। পুরোনো গভীর নলকূপটিই তাঁরা সরাচ্ছেন। এরপর ওয়াসার কর্মকর্তারা ফিরে যান।
গতকাল পুনরায় গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ শুরু করলে বিষয়টি আবারও ওয়াসাকে জানায় জেলা প্রশাসন। এরপর ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলামের নেতৃত্বে বিকেলে ওয়াসার কর্মকর্তারা আবারও যান কোর্ট হিলে। তাঁদের সঙ্গে যান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ। ছিল পুলিশের একটি দলও। তাঁরা নলকূপ স্থাপনে বাধা দিলে আইনজীবী সমিতির নেতারাও আসেন। এ সশয় দুই পক্ষে কথাকাটাকাটি হয়।
ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা এরফানুল করিম সাজ্জাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অনুমতি না নিয়ে গভীর নলকূপ স্থাপনের কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তবে আইনজীবী সমিতির নেতারা বলেছেন আগে থেকেই একটি নলকূপ তাঁদের আছে। সেটিতে পানি না ওঠায় তারা আরেক জায়গায় সরাতে পরীক্ষামূলকভাবে নলকূপ স্থাপন করছেন। তবে পুরোনো নলকূপেরও অনুমোদন নেওয়া ছিল না।’
আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গভীর নলকূপ আছে। সেটি থেকে যে পানি পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো ঘোলা। এ কারণে কতটুকু গভীরে গেলে পানি পরিষ্কার পাওয়া যাবে, সেটি জানতে পরীক্ষামূলকভাবে নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ওয়াসাকে দিয়ে তাতেও বাধা দিতে চাচ্ছে। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে বড় আন্দোলনে যাব।’
তবে এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।