আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় তিন দিন ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে কালীগঙ্গা, পুরাতন ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদীর পানি। অসময়ে পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন বেড়েছে। ইছামতী নদীর ভাঙনে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর হাটের (গরুর হাট) অর্ধেকাংশ বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুটি বাজারসহ নদীতীরবর্তী ১৬ গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছে ভাঙন আতঙ্কে।
জানা যায়, নদীর পানি বৃদ্ধি ও গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির ফলে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে প্রায় অর্ধশত বসতভিটা, ব্রিজ, কালভার্ট ও ফসলি জমি। ভাঙনের হুমকির মধ্যে রয়েছে গরুর হাটের বাকি অংশ, হাটসংলগ্ন ব্রিজ, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা। অনেক পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্র সরে গেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর গরুর হাট অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। ঘিওর সদর ইউনিয়নের কুস্তা গরুর হাট এলাকায় প্রবল ভাঙনে দোকানপাট নদীতে বিলীন। পাশের দোকানের পণ্য অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
বড় রামকান্তপুর-কুঠিবাড়ি এলাকায় ইছামতী শাখানদীর ভাঙন-আতঙ্কে রয়েছে ৫০ পরিবার। অনেকের বাড়ির অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আসবাব ও অন্যান্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
অপর দিকে কালীগঙ্গা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে কাঁচা রাস্তা ও কয়েকটি বসতবাড়ি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করে সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান বলেন, কুস্তা গরুর হাট ভাঙনকবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে পাঁচ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে। ভাঙনের শিকার ৮টি স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করেছি।
মানিকগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈনুদ্দিন বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। বালু এবং দক্ষ শ্রমিকসংকটের কারণে ওখানে কাজ শুরু করতে একটু দেরি হচ্ছে। বুধবার (আজ) সকাল থেকে আমরা ভাঙন রোধে কাজ শুরু করতে পারব।’