ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
মা-বাবার মৃত্যুর পর সন্তানের ইমামতিতে পড়ানো হবে জানাজা—এমন উদ্দেশ্য মাথায় রেখে নিজের সন্তানকে পড়িয়েছেন হাফেজি মাদ্রাসায়। নিজের আপ্রাণ চেষ্টায় পুরো ত্রিশ পারা কোরআন মুখস্থ করেন আবদুল খালেক। তবে হাফেজি শেষ করলেও স্বপ্ন পূরণ হয়নি তাঁর মা-বাবার।
হাফেজি শেষ করার কয়েক মাসের মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন খালেক। এরপর ১৫ বছর ধরে শিকলবাঁধা অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাঁকে।
বর্তমানে অর্থকষ্টে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে দিন দিন তাঁর অবনতি হচ্ছে। চিকিৎসায় বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করে তাঁর পরিবার। আবদুল খালেক জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর ইউনিয়নের ভোটাল গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জয়শ্রেরী রাহমানিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন তিনি। ১৫ বছর আগে হাফেজি শেষ করার কয়েক মাসের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য। পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁকে চিকিৎসা করানো হয়। বর্তমানে বসতঘরের সঙ্গে তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
তাঁর মা শামছুন্নাহার বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমার স্বামী শ্রমিকের কাজ করতেন, ছেলে অসুস্থ হওয়ার পর সম্পত্তি বিক্রি করেও চিকিৎসা করানো হয়েছিল। কিন্তু সেরে ওঠেনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’
জয়শ্রেরী রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার মুহ্তামিম মহসিন বলেন, ‘আবদুল খালেক খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। সে অসুস্থ হওয়ার পর মাদ্রাসার পক্ষ থেকে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সে শিকলবাঁধা অবস্থায় আছে, বিষয়টি দুঃখজনক। তাকে সুস্থ করার জন্য আল্লাহর রহমতের পাশাপাশি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’