দেবিদ্বার প্রতিনিধি
দেবিদ্বারে তিন কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে আনুমানিক ২০০ চুলার গ্যাস বিচ্ছিন্ন হয়। গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের নুরমানিকচর ও আতাপুর গ্রামে অভিযান চালায় কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।
অভিযানে নেতৃত্বে দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। অভিযানে দুই গ্রামের ৭০টি পরিবারে অবৈধ সংযোগে গ্যাস ব্যবহারের হদিস মিলে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড উপমহাব্যবস্থাপক মো. শাহানুর আলম, উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সগির আহমেদ, ব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান, মো. বেলায়েত হোসেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কুরছাপ গ্রামের আবদুল করিম ও তাঁর ছেলে তানভীর নুরমানিক চর ও আতাপুর গ্রামে আনুমানিক পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে অবৈধ গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা করে দেন। এ জন্য তাঁরা জনপ্রতি সংযোগের আগে ২০ হাজার এবং সংযোগ স্থাপনের পরে ৩০ হাজার টাকা করে নেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতের আঁধারে এ সংযোগ দেওয়া হয়।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড উপমহাব্যবস্থাপক মো. শাহানুর আলম বলেন, অবৈধভাবে স্থাপিত দুই ইঞ্চি ব্যাসের তিন কিলোমিটার সংযোগ স্থলসহ ১ হাজার ২০০ ফুট পাইপ লাইন অপসারণ করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ৭০টি বাড়ির আনুমানিক ২০০ অবৈধ চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। যারা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘কুরছাপ গ্রামের তানভীর বিশেষ ব্যবস্থায় গ্যাস সংযোগের অনুমোদন এনেছে বলে দুই দফায় আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমাদের গ্যাসের বইও দিয়েছে। আমরা বিল জমা দিতে গিয়ে দেখি গ্যাস সংযোগ অবৈধ। আমরা এ কথা তানভীরকে জানালে তিনি এসে আমাদের কাছ থেকে বই নিয়ে আর ফেরত দেননি।’
অপর ভুক্তভোগী আতাপুরের মফিজুল ইসলাম বলেন, চার বছর আগে টাকার বিনিময়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেন তিনি। যাঁরা গ্রামের সাধারণ মানুষকে গ্যাসের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত আবদুল করিম ও তাঁর ছেলে তানভীরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। অভিযানের খবরে তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, নুরমানিকচর ও আতাপুর গ্রামের তিন কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। যাঁরা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়মিত এ ধরনের অভিযান চলবে।