সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামে হাসপাতালে নেওয়ার পথে গত বুধবার কুলসুমা বেগম (৩০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। প্রসব বেদনা উঠলে গভীর রাতে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়া হলে সেখান থেকে জরুরি চট্টগ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই প্রসূতির স্বামী সাইফুল ইসলামের অভিযোগ, সন্দ্বীপের কুমিরা ঘাটে জরুরি রোগী পারাপারে কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। শুধু এই ঘটনা নয়, কুমিরা ঘাট পারাপারে সি অ্যাম্বুলেন্স কার্যকর না থাকায় সম্প্রতি বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সন্দ্বীপে।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফজলুল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৮ সালে সন্দ্বীপের জন্য একটা সি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৩ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দায়িত্বে আসার পর কয়েকবার মেরামত করে এটি চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও সফল হয়নি। মেরামতের পরদিনই এটি অদৃশ্য কারণে আবার নষ্ট হয় যায়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এই সি অ্যাম্বুলেন্সকে ঘাট থেকে মালেক মুন্সির বাজারের ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখন এখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে বর্তমানে গুপ্তছড়া ঘাটে যে সি অ্যাম্বুলেন্সটি আছে সেটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ওই প্রসূতির স্বামী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কুমিরা ঘাটে জাহাজ সকাল ৭টার দিকে ছাড়ার কথা থাকলেও ছাড়ে সাড়ে ৮টার দিকে। তিনি বলেন, ‘আজ যদি সি অ্যাম্বুলেন্স থাকত তাহলে স্ত্রীকে হারাতে হতো না। সরকারের কাছে আবেদন, দ্রুত রোগী পারাপারের জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করুন।’
সম্প্রতি ২০ এপ্রিল স্পিডবোট দুর্ঘটনায় তিন শিশু নিহত ও একজন নিখোঁজের ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ’র নির্দেশে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছেন ঘাট ইজারাদার। একদিকে জরুরি রোগীদের জন্য সি-অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস কার্যকর না থাকায় ও ইমার্জেন্সি রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, ‘এটি হাওর এলাকার জন্য উপযুক্ত। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এই সি অ্যাম্বুলেন্সকে ঘাট থেকে মালেক মুন্সির বাজারে ২০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখন এখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে বর্তমানে গুপ্তছড়া ঘাটে যে সি অ্যাম্বুলেন্সটি আছে সেটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।’
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসার কাছে এ মুহূর্তে জরুরি রোগী পারাপারের জন্য কী ব্যবস্থা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে জরুরি রোগী পারাপারের জন্য গুপ্তছড়া ঘাটে সার্বক্ষণিক একটা লালবোট (লাইফবোট) থাকবে। এ ছাড়া কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌরুটে চলাচলের উপযোগী সি অ্যাম্বুলেন্স যাতে বরাদ্দ দেয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।