মুফতি খালিদ কাসেমি
আরবি তওবা শব্দের অর্থ প্রত্যাবর্তন, অনুশোচনা, অনুতাপ, ক্ষমা ইত্যাদি। অতীত পাপকাজ থেকে ফিরে আসা এবং ভবিষ্যতে তা না করার দৃঢ়সংকল্পকেই শরিয়তের ভাষায় তওবা বলা হয়। বান্দার তওবা মহান আল্লাহর প্রিয় কাজ। যে ব্যক্তি কোনো পাপকাজের পর অনুতপ্ত হয়, মহান আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘আল্লাহ অবশ্যই সেসব লোকের তওবা কবুল করেন, যারা অজ্ঞতাবশত কোনো গুনাহ করে ফেলে। তারপর দ্রুত তওবা করে নেয়। সুতরাং আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা নিসা: ১৭)
গুনাহের কাজ ইচ্ছা করে হোক বা ভুলক্রমে—উভয় অবস্থাতেই তা মূর্খতাবশত সম্পন্ন হয়। এ কারণেই সাহাবি, তাবেয়ি ও গোটা উম্মতের এ ব্যাপারে ঐকমত্য রয়েছে, যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে কোনো গুনাহ করে, তার তওবাও কবুল হতে পারে। (মাআরেফুল কোরআন)
এক হাদিসে তওবাকারীকে নিষ্পাপ ব্যক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘পাপ থেকে তওবাকারী ব্যক্তি নিষ্পাপ ব্যক্তির মতো।’ (ইবনে মাজাহ) হারানো উট ফিরে পাওয়ার পর মালিক যেমন খুশি হয়, কোনো বান্দা তওবা করলে আল্লাহ তাআলা এর চেয়েও বেশি খুশি হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা বান্দার তওবার কারণে সেই লোকটির চেয়েও বেশি খুশি হন, যে মরুভূমিতে তাঁর উট হারানোর পর তা পেয়ে যায়।’ (মুসলিম)
যদি কোনো ব্যক্তি নিজেকে বড় গুনাহসমূহ থেকে বাঁচিয়ে রাখে, তাহলে দয়াময় আল্লাহ নিজেই তার ছোট ছোট গুনাহ ক্ষমা করে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘যে বড় গুনাহসমূহ করতে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে, তোমরা যদি তা পরিহার করে চলো, তবে আমি নিজেই তোমাদের ছোট ছোট গুনাহ তোমাদের থেকে মিটিয়ে দেব এবং তোমাদের এক মর্যাদাপূর্ণ স্থানে প্রবেশ করাব।’ (সুরা নিসা: ৩১)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক