বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটে ছয় মাসেও কুড়িয়ে পাওয়া সাত বছরের শিশু মীমের অভিভাবকদের খোঁজ পায়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর। বৈধ অভিভাবকের অপেক্ষায় বাগেরহাট সরকারি শিশু পরিবারে দিন কাটছে মীমের।
থানা-পুলিশ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনেক চেষ্টাতেও মীমের অভিভাবকদের খোঁজ মিলছে না। মীমকে কী করবে এই নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিও রয়েছে বিপাকে।
শুধু মীম নয়, বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়ায় নবজাতক ইমারও কোনো অভিভাবক পায়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর। অভিভাবক পাওয়া যায়নি বাগেরহাট শহরের দক্ষিণ হাড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার হওয়া বাক্প্রতিবন্ধী এই ছেলে শিশুর। দুজনই এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে খুলনা ছোটমণি নিবাসে রয়েছে।
তবে সমাজসেবা অধিদপ্তর বলছে, কোনো নিঃসন্তান সক্ষম দম্পতি স্বেচ্ছায় এই শিশুদের নিতে চাইলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে দত্তক দেওয়া হবে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে বাগেরহাট শহরের মুক্তি ক্লিনিকের সামনে থেকে মীমকে উদ্ধার করে বাগেরহাট মডেল থানা-পুলিশ। পরের দিন ১৪অক্টোবর মীমকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু পরিবারে হস্তান্তর করা হয়।
পরে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও মডেল থানা-পুলিশ নানা চেষ্টাতেও মীমের অভিভাবক খুঁজে পায়নি। বাড়ি জানতে চাইলে মীম শুধু বলে, তাঁর বাড়ি সিলেট। তবে মা-বাবার সম্পর্কে সে কিছুই বলতে পারে না। মীমের গায়ের রং হালকা ফরসা এবং স্বাস্থ্য ভালো।
এদিকে ২০ মার্চ দুপুরে বাগেরহাট শহরের দক্ষিণ হাড়িখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তিন বছর বয়সী বাক্প্রতিবন্ধী একটি ছেলেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এই শিশুটিকেও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন বোরকা পরা এক নারী শিশুটিকে স্কুলের সামনে রেখে গিয়েছিল। প্রায় এক মাস পার হলেও বাক্প্রতিবন্ধী শিশুর অভিভাবক হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তরে কেউ আসেনি।
গত ২ এপ্রিল বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া এলাকার আজমুল কবির ইমামুল দম্পতির কাছে এক লোক পানি খাওয়ার কথা বলে এক নবজাতককে রেখে যান। আজমুল কবির দম্পতি একদিন বয়সী ওই কন্যাশিশুর নাম রাখেন ইমা। পরের দিন ৩ এপ্রিল তাঁরা শিশুটিকে সদর থানায় হস্তান্তর করেন। শিশুটিকে খুলনার ছোটমণি নিবাসে পাঠায় সমাজসেবা অধিদপ্তর।
১৫ দিনেও শিশুটির দাবি নিয়ে কেউ সমাজসেবা অধিদপ্তরে আসেনি। নিঃসন্তান দম্পতিরাও তেমন আবেদন করেনি।
সমাজসেবা অধিদপ্তর, বাগেরহাটের প্রবেশন অফিসার সোহেল পারভেজ বলেন, শিশু মীম এখন তাঁদের তত্ত্বাবধানে সরকারি শিশু পরিবারে রয়েছে। নবজাতক ইমা ও বাক্প্রতিবন্ধী শিশুটি ছোটমণি নিবাসে রয়েছে। কোনো নিঃসন্তান দম্পতি এই শিশুদের নিতে চাইলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের অনুকূলে এই শিশুদের লালন-পালন করতে দেবেন। সক্ষম নিঃসন্তান দম্পতিদের এই শিশুদের লালন-পালনের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানান এই সমাজসেবা কর্মকর্তা।