মুফতি খালিদ কাসেমি
মানুষের মৃত্যুর পর তার আমলনামায় পুণ্যের ধারা বন্ধ হয়ে যায়। মৃত ব্যক্তি এ সময় জীবিতদের পাঠানো সওয়াবের আশায় থাকেন। কারণ, নতুন করে তাঁর আমলনামায় কোনো সওয়াব যুক্ত হয় না। তবে তিনটি কাজ এমন রয়েছে, যার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর পরও উপকৃত হতে থাকেন। তাঁর আমলনামায় এসব কাজের সওয়াব জমা হতে থাকে।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমলের সওয়াব বন্ধ হয় না। এক. সদকায়ে জারিয়া। দুই. এমন জ্ঞান, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। তিন. নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (আবু দাউদ)
কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, নফল নামাজ, রোজা, তাওয়াফ, হজ, ওমরাহ, কোরবানি, গরিব-মিসকিনদের দান ইত্যাদির মাধ্যমে মৃত ব্যক্তিদের জন্য সওয়াব পাঠানোকে ইসলামের পরিভাষায় ইসালে সওয়াব বলা হয়।
ইসালে সওয়াব শরিয়তে বৈধ একটি বিষয়। ইসালে সওয়াবের পদ্ধতি হলো, শারীরিক কিংবা আর্থিক কোনো নফল আমল করার পর শুধু এই নিয়ত করা যে ‘হে আল্লাহ, এই আমলের সওয়াব অমুক অমুক ব্যক্তি পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’
আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের মতানুসারে, এভাবে সওয়াব পাঠালে মৃত ব্যক্তি এবং প্রেরক উভয়ে সমান সওয়াব পাবেন। কারও সওয়াবে কিঞ্চিৎ পরিমাণ তারতম্য করা হবে না। এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মা-বাবার মৃত্যুর পর তাদের পক্ষ থেকে হজ করে, তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরোয়ানা লেখা হয়। আর যে দুজনের পক্ষ থেকে হজ করা হয়েছে, তারা পরিপূর্ণ হজের সওয়াব পায়। হজ আদায়কারী এবং যাদের পক্ষ থেকে হজ করা হয়েছে, কারও সওয়াবে কিঞ্চিৎ পরিমাণ তারতম্য করা হয় না।’ (শুয়াবুল ইমান)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক