বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বিরলের ঐতিহ্যবাহী ধান কাটারিভোগ। এবার ভালো ফলন ও দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম থাকার কারণেই চাষিরা এবার ভালো দাম পাচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে আগামী দিনে কাটারিভোগ চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। চাষিরা জানিয়েছেন, এবার বাজারে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে কাটারিভোগ। এতে খুশি তাঁরা। গত বছর ৭৫ কেজির বস্তা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার দাম উঠেছে পাঁচ হাজার টাকা।
জানা গেছে, বিরলের কাটারিভোগ চালের সুখ্যাতি দেশ জুড়েই। কিন্তু খ্যাতি ও চাহিদা থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে গত কয়েক বছর ভালো দাম পাননি চাষিরা। ফলে অন্যান্য ধানের তুলনায় ফলন কমের পাশাপাশি ভালো দাম না পাওয়ায় আবাদ কমিয়ে দেন কৃষকেরা। কিন্তু বাজারে এবার সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে কাটারিভোগ ধান।
ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণেই বেড়েছে কাটারিভোগ ধানের দাম।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহসম্পাদক হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে কাটারিভোগ ধানের আবাদ কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে আগের তুলনায় এই ধানের আবাদ চার ভাগের একভাগে নেমে এসেছে।’ কাটারিভোগ ধানের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এই অর্থনীতিবিদ।
কাটারিভোগ ধানের আবাদ কমে আসার কথা স্বীকার করে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মাহবুবুর রশিদ বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগ ধানের আবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকরাও লাভবান হবেন।’
দিনাজপুর জেলায় এবার ২ লাখ ৬০ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। এর মধ্যে সুগন্ধিযুক্ত ধান আবাদ করা হয় ৮৩ হাজার ৮৫১ হেক্টর জমিতে। আর ঐতিহ্যবাহী কাটারিভোগ ধান আবাদ হয় মাত্র ১ হাজার ৩৭৬ হেক্টর জমিতে।