পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
পীরগঞ্জে ঔষধি গাছ ভাগ্য বদলে দিয়েছে জাহাঙ্গীরাবাদ গ্রামের মেহেদুল ইসলামের। তাঁর সফলতা দেখে এলাকার শতাধিক কৃষকও এই পথে এসেছেন। তাঁদের কাছ থেকে গাছের পাতাসহ বিভিন্ন অংশ কিনে নিচ্ছে ওষুধ কোম্পানি।
মেহেদুল এখন বাণিজ্যিকভাবে ঔষধি গাছের চারা তৈরিকেই জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ঔষধি বাগান থেকে চারা ও বীজ বিক্রি করে তাঁর আয় ক্রমেই বাড়ছে। বাগানের চারার চাহিদার ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে নিজ এলাকা ছাড়িয়ে আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার জাহাঙ্গীরাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনে ঔষধি বাগানে চারা লাগিয়েছেন মেহেদুল। তিনি জানান, তিনি ২০১৪ সালে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সামান্য জমিতে বিভিন্ন জাতের ঔষধিগাছের চারা রোপণ করেন। এক সময় তা বাগানে রূপ নেয়।
মেহেদুল পরে বাগানে তুলসী, কালমেঘ, বাসক ও অর্শ গন্ধার চারা লাগিয়ে পরিচর্যা শুরু করেন। শেষে একমি ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের লোকজন ওষুধ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ঔষধি গাছের পাতা কিনতে মেহেদুলের সঙ্গে চুক্তি করেন। মেহেদুলের বাগানের অগ্রগতি ও সফলতা দেখে স্থানীয় পাঁচগাছি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষক সেখান থেকে চারা কিনে নিজেদের জমিতে বাগান তৈরি করেন। এভাবে ওই এলাকায় শতাধিক কৃষক এখন ঔষধি গাছের চারা লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
মেহেদুল জানান, তিনি ওষুধ কোম্পানিতে ২০১৬ সাল থেকে পাতা বিক্রি করে আসছেন। এ বছর কাঁচা তুলসী পাতা ১৫ টন, বাসক ৮ টন এবং কালমেঘ ও অর্শ গন্ধার ২ টনের চাহিদা রয়েছে।
ইউনিয়নের পানেয়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়া বলেন, তাঁদের ইউনিয়নের শতাধিক কৃষক মেহেদুলের কাছ থেকে চারা ও বীজ সংগ্রহ করে ঔষধি বাগান তৈরি করেছেন। পাশাপাশি উৎপাদিত পাতা মেহেদুলের মাধ্যমে কোম্পানিতে বিক্রি করে থাকেন। তাঁদের ঔষধিগাছের চাষাবাদ দেখে একটি ব্যাংক ১০০ চাষিকে ১ লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলার পাঁচগাছি এলাকার কৃষকেরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের জমিতে ঔষধিগাছ লাগিয়ে তাঁরা ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। আমাদের কৃষি বিভাগ সব সময় তাঁদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’