এস এস শোহান, বাগেরহাট
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরি শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও আয়োজকেরা। বাগেরহাটও ব্যতিক্রম নয়, এ জেলায় এবার ৬৬৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ১৬৮টি মণ্ডপে পূজা হবে চিতলমারী উপজেলায়।
এ ছাড়া বাগেরহাট সদর উপজেলায় ১১৬ টি, মোল্লাহাটে ৮৪ টি, মোরেলগঞ্জে ৭৭ টি, ফকিরহাটে ৬৮ টি, কচুয়ায় ৪৪, রামপালে ৪১, মোংলায় ৩৭ এবং শরণখোলায় ২৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের পূজায় ১৫১টি প্রতিমা নিয়ে জেলার সব থেকে বড় আয়োজন হচ্ছে সদর উপজেলার চুলকাঠি বণিকপাড়া মণ্ডপে। বণিকপাড়ার এই মণ্ডপ ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
গতকাল বুধবার বিকেলে বণিকপাড়া মণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, মণ্ডপের বাইরের গেট ও সাজসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকেরা। মূল মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশ করতেই দুই পাশে বিভিন্ন নামের দেব-দেবীর প্রতিমার সারি। সর্বশেষ মূল মণ্ডপে রয়েছে মা দুর্গা ও তার সহযোগী দেবীদের প্রতিমা। দুই মাস ধরে ৪ জন কারিগর রামায়ণ ও মহাভারতের চার যুগের দেবদেবীর নানা কাহিনি অবলম্বনে তৈরি করেছে ১৫১টি প্রতিমা।
কারিগর তাদের নিপুণ হাতে প্রতিমা ফুটিয়ে তুলেছেন ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য। মূল পূজা শুরু না হলেও, এখনই বিভিন্ন স্থান থেকে জেলার সব থেকে বড় এ আয়োজন দেখতে দর্শনার্থীরা আসছেন। খুলনা বিএল কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ডলি দত্ত বলেন, এত বড় আয়োজন আমরা আগে কখনো দেখিনি। খুব ভালো লাগছে আমাদের। দেবী দত্ত নামের স্থানীয় এক গৃহবধূ বলেন, শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলিমরাও আসছেন এই প্রতিমা দেখতে। স্থানীয় সবাই এক সঙ্গে মিলে আমরা এই উৎসব উদ্যাপন করি। এবার ১৫১টি প্রতিমার কথা শুনে দূর দুরান্ত থেকে অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন আসার জন্য।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে বিসর্জন প্রদান অর্থাৎ দশমী পর্যন্ত আমরা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। আশাকরি সবাই মিলে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদ্যাপন করতে পারব। ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। ৫ সেপ্টেম্বর দশমী ও বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।