মুফতি মুহাম্মদ জাকারিয়া আল-আজহারি
প্রশ্ন: আমার ডায়মন্ডের একটি হার এবং দুটি আংটি আছে, যার বাজারমূল্য জাকাতের নিসাবের চেয়ে অনেক বেশি এবং তা আমি কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করছি। সেগুলোর জন্য কি জাকাত দিতে হবে?
সাদিয়া তারাননুম, ঢাকা
উত্তর: সোনা-রুপা ছাড়া অন্য কোনো খনিজসম্পদে জাকাত ফরজ নয়। এই নীতির আলোকে ডায়মন্ডসহ অন্যান্য মণি-মুক্তার গয়নার জন্য জাকাত ফরজ হবে না। তবে এসব গয়না ব্যবসার উদ্দেশ্যে কেনা হলে, জাকাত দিতে হবে। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘সোনা-রুপা ছাড়া অন্যান্য গয়না যেমন ইয়াকুত, ফিরুজ ও মারজান পাথরে জাকাত ওয়াজিব নয়।’ (দুররুল মুখতার: ২ / ৩৪)
তবে একালের বেশির ভাগ মানুষ সম্পদ কুক্ষিতগত করে রাখতে এবং আয়কর থেকে বাঁচতে নগদ টাকার বদলে গয়না রাখছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে হিরে-জহরতের গয়না কেনা তাদের আসল উদ্দেশ্য নয়; বরং সম্পদ রক্ষাই তাদের মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। তাই অনেক ফকিহর মত হলো, এমন অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ডায়মন্ডসহ অন্যান্য গয়না কিনলে তাতে জাকাত দিতে হবে। তবে এ মতটি দুর্বল।
এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো, ডায়মন্ডের গয়নায় জাকাত ওয়াজিব হবে না। কারণ জাকাত ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত এবং কোন কোন সম্পদের জাকাত দিতে হবে, কী পরিমাণ দিতে এবং কাকে দিতে হবে—সবই সরাসরি কোরআন-হাদিসে বলে দেওয়া আছে। তাই এ ব্যাপারে যুক্তি ও গবেষণার অনুমোদন দেয় না ইসলাম। সুতরাং ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য ছাড়া ডায়মন্ড কিনলেও জাকাত ওয়াজিব হবে—এমন বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই।
তবে মতভেদপূর্ণ বিষয় হওয়ায় কেউ যদি সতর্কতা অবলম্বন করতে এসব সম্পদেরও জাকাত আদায় করে দেয়, তাতে কোনো অসুবিধা নেই; বরং তা অধিক সওয়াবের কারণ হবে। (জদিদ ফিকহি মাসায়েল: ১ / ১৪১)
উত্তর দিয়েছেন
মুফতি মুহাম্মদ জাকারিয়া আল-আজহারি
মুহাদ্দিস, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম