মাসুদুর রহমান মাসুদ ঝিকরগাছা (যশোর)
চারদিকে বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি আর পটোলের খেত। মাঝে বোরো ধানের বীজতলা। পলিথিন দিয়ে ঢাকা বীজতলাসহ জমিগুলো অপেক্ষাকৃত উঁচু। ফলে খেতগুলো তুলনামূলক শুকনো। বীজতলাটিও শুকনো। এমন চিত্র দেখা গেছে যশোরের ঝিকরগাছার বোধখানা গ্রামের একটি মাঠে। এ ধরনের বীজতলা কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ-সহনশীল বলে জানিয়েছে জেলার কৃষি অধিদপ্তর।
কৃষি অধিদপ্তরের দাবি, পদ্ধতিটি লাভবান হওয়ায় অঞ্চলটিতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুকনো ও আদর্শ বীজতলা। কয়েক বছরে এ ধরনের বীজতলার সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে।
বোরো-ইরি চাষের জন্য চলতি মৌসুমে শুকনো ও আদর্শ বীজতলা করেছেন উপজেলার বোধখানা ব্লকের বোধখানা ও বারবাকপুর গ্রামের অন্তত ১০ জন কৃষক। বোধখানা গ্রামের বেলে মাঠপাড়ার কৃষক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে শুকনো ও আদর্শ বীজতলা করেছি। এতে খরচের পাশাপাশি রোগব্যাধিও কম। কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে বীজতলার তেমন ক্ষতি হয় না। মাত্র ২০ দিন বয়সের চারা লাগানো যায়।’
প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা করতে বেশি বীজের প্রয়োজন হয়, বিপরীতে এই ধরনের বীজতলায় কম বীজ লাগে বলে জানান একই গ্রামের কৃষক ওসমান গনি। তিনি বলেন, এ ধরনের বীজতলায় ১ মিটার চওড়া ১০ মিটার লম্বা (সুবিধামতো) বেড করে চারপাশে চলাফেরা ও আলো-বাতাস প্রবাহের জায়গাসহ পানি দেওয়ার জন্য নালা রাখতে হয়। প্রতি শতক জমিতে তিন-চার কেজি বীজ লাগে।
কৃষি অধিদপ্তর জানায়, শুকনো বীজতলা তৈরির জন্য শুকনো বেডে (হালকা রসাল) বীজধান ছিটিয়ে দিতে হয়। পরে জৈব সার দিয়ে সাদা পলিথিনে এটিকে ঢেকে দিতে হবে। মাঝেমধ্যে পলিথিন উঠিয়ে দেখতে হবে। বেড যদি বেশি শুকনো লাগে, তাহলে ঝাঁজরি দিয়ে অল্প পানি দিতে হবে। পলিথিন থাকায় ঘেমে প্রয়োজনীয় পানি আবার বেডে পড়বে। ফলে অতিরিক্ত পানি দেওয়া লাগে না। পাশাপাশি রোগব্যাধি, পোকামাকড়ের আক্রমণ, শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশায় ক্ষতি হয় না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, শুকনো ও আদর্শ বীজতলার খরচ এবং ঝুঁকি কম। ফলে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।