ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
আজ থেকে সাগর দ্বীপে আলোর কোলে অনুষ্ঠিত হবে রাসপূজা। হাজার হাজার পুণ্যার্থীদের আগমনে রাস পূজা হয়ে উঠবে উৎসবমুখর। তবে এ বছর সনাতন ধর্মাবলম্বী লোক ছাড়া রাস পূজায় কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ইতিমধ্যে রাস পূজাকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের উদ্যোগে বনজ সম্পদ রক্ষায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। সম্প্রতি সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত দুবলার চরের অনুষ্ঠিত হবে এই রাস পূজা।
শরণখোলা রেঞ্জের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান বলেন, রাস পূজা নির্বিঘ্নে যাতে তীর্থ যাত্রীরা যেতে পারে এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে সুন্দরবন শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. সামসুল আরেফিন বলেন, সাগরকুলে রাস পূজায় পুণ্যার্থীদের ১৭ নভেম্বরের আগে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
১৫ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম চালাবে বন বিভাগ। ১৪ নভেম্বরের পর কোনো ব্যক্তি সুন্দরবনে প্রবেশ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্ধারিত সময় ছাড়া কোনো লোক সুন্দরবন অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না। পূজার শৃঙ্খলা রক্ষা ও সুন্দরবনে শব্দ দূষণরোধে রাশ মেলাস্থল ও যাতায়াত রুটে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। সকল প্রকার শব্দ দূষণ, বিনা অনুমতিতে প্রবেশ রোধ, চোরা শিকার ও দস্যুতা রোধে নৌ-বাহিনী, বন বিভাগ, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে কাজ করবে বলে জানানো হয়।
বন বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়-তীর্থযাত্রীদের আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য দুবলার চরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রবেশের সময় প্রবেশ পথে নির্দিষ্ট ফি দিতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে।রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনে রাস পূজাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বন বিভাগের অভিযান পরিচালনার জন্য কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পূর্ণিমা পুণ্য স্নানে কেবল তিন দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোনো তীর্থযাত্রীকে পুণ্য স্নান স্থলে যেতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াস রাখা হবে বলে জানান।