হোম > ছাপা সংস্করণ

ইসলামে বই পড়া ও জ্ঞানচর্চার গুরুত্ব

ড. মো. শাহজাহান কবীর

মহানবী (সা.)-এর ওপর হেরা গুহায় প্রথম কোরআনের যে আয়াত নাজিল হয়েছিল, তা ছিল পড়াসংক্রান্ত। আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে বলেছেন, ‘পড়ো, তোমার পালনকর্তার নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক: ১) সুতরাং মহান প্রতিপালক আল্লাহর নামে পড়ার তাগিদ দিয়েই পবিত্র কোরআন নাজিলের সূচনা হয়েছিল।

মানুষ পড়েই জ্ঞানার্জন করে, বিবেক শাণিত করে। ইসলাম, আল্লাহর বিধান এবং দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে জানতে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। 

তাই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে জ্ঞানার্জন ও গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন। মহাবিশ্বে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করে তাঁর অস্তিত্ব অনুধাবনের চেষ্টা করতে বলেছেন।

প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন সব মুসলমানের জন্য আবশ্যক করে দিয়েছেন মহানবী (সা.)। হাদিসে এ বিষয়ে একাধিক নির্দেশনা এসেছে। কারণ মহান আল্লাহ মানুষকে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করতে হলে জ্ঞানার্জন করা আবশ্যক। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই জ্ঞানী লোকেরাই আমাকে বেশি ভয় করে চলে, আর আল্লাহ তাআলা মহাপরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল।’ (সুরা ফাতির: ২৮)

কোরআন-সুন্নাহর প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজ। কারণ জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই ইসলামি শরিয়াহর হালাল-হারাম, করণীয়-বর্জনীয় বিষয়গুলো জানা সম্ভব। ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন গড়তে হলে, জীবনের সব পর্যায়ে ইসলামকে মানতে হলে জানার কোনো বিকল্প নেই।

ধর্মীয় জ্ঞান ছাড়া দুনিয়াবি জ্ঞানের মধ্যে যেসব জ্ঞান মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন, সেই সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করাও মানুষের জন্য অপরিহার্য। যাঁরা জ্ঞান অর্জন করেন, ইসলামে তাঁদের বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এবং একজন মূর্খ ও একজন জ্ঞানীর মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। জ্ঞানীর মর্যাদা বর্ণনা করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?’ (সুরা যুমার: ৯) অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা তাদের মর্যাদা উন্নত করবেন।’ (সুরা মুজাদালাহ: ১১)

উপকারী জ্ঞানকে ইসলাম সদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইসলাম ও মানুষের কল্যাণে চর্চিত জ্ঞান পরকালে মানুষের মুক্তির কারণ হবে এবং জ্ঞানীর জন্য অবিরত সওয়াব পৌঁছাতে থাকবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার তিনটি ছাড়া সব আমলের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এক. সদকায়ে জারিয়া তথা প্রবহমান দান। দুই. মানুষের কল্যাণে চর্চিত জ্ঞান। তিন. নেক সন্তান, যে মৃতের জন্য দোয়া করে।’ (মুসলিম)

জ্ঞানী মানুষেরা স্রষ্টাকে চেনেন এবং তাঁর আনুগত্য করেন। কারণ তিনিই সব জ্ঞানের উৎস। মানুষের জ্ঞান যত বাড়ে, মানুষ তত বিনয়ী হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পক্ষান্তরে যারা জ্ঞান ও বিদ্যায় পাকাপোক্ত, তারা বলে—আমরা তাঁর প্রতি ইমান এনেছি, সবই আমাদের রবের তরফ থেকে এসেছে। আর সত্য কথা হলো, জ্ঞানীরা ছাড়া কেউই নসিহত করে না। (সুরা আলে-ইমরান: ৭)

জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, জ্ঞানহীন মানুষ অন্যায়ভাবে কোনো কাজ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনে। তাই মহান আল্লাহ জ্ঞানী ব্যক্তির কাছ থেকে জানার নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যদি না জানো, তবে জ্ঞানীদের কাছ থেকে জেনে নাও।’ (সুরা নাহল: ৪৩) ‍

আমাদের দেশে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বইমেলার আয়োজন করা হয়। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ মেলায় অংশ নেয় এবং তাদের মধ্যে বই পড়া ও কেনায় বেশ উৎসাহ দেখা যায়। মূলত বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ অজানাকে জানতে পারে, নতুন কিছু শিখতে পারে, জ্ঞানের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারে। জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও (মানুষের কাছে) পৌঁছে দাও।’ (তিরমিজি) 

লেখক: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন