মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের কয়লা গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
জানা গেছে, মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়লা গ্রামে বসবাস করে প্রায় ৯০০ পরিবার। এসব পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। অবশেষে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর অধীনে প্রথম ধাপে কয়লা গ্রামের ৯০ পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে প্রক্রিয়ার শুরুতেই এসব পরিবার থেকে বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগে বলা হয়, চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর বারইয়ারহাট জোনাল অফিসের অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ান সাইফুল ইসলাম বিদ্যুৎ সংযোগের নামে ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার টাকা আদায় করছেন। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর সভাপতি জাবেদ ইকবালকে মৌখিক অভিযোগ দিলে সাইফুল ইসলাম এলাকার লোকজনকে হুমকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) নূর মোহাম্মদ আজম মজুমদার বলেন, একটি সংযোগে প্রতি কিলোওয়াট ফি ৪০০ টাকা। কিলোওয়াট বাড়লে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা বাড়বে। এ ছাড়া আবেদন ফি ১১৫ এবং সদস্য ফি ৫০ টাকা। এর বেশি টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে কথা বলতে ইলেকট্রিশিয়ান সাইফুল ইসলামকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এবং গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
তবে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর সভাপতি জাবেদ ইকবাল বলেন, ২ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। অফিস খরচ নেওয়া হচ্ছে ৯৬৫ টাকা। এ ছাড়া রড, কাটআউট বাবদ বাকি ৫৩৫ টাকাসহ মোট ১ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
গ্রাহকদের হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘কেউ আমাকে বিষয়টি জানাননি। হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এ ধরনের প্রমাণ কেউ দিতে পারলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব।’
এক প্রশ্নের জবাবে জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘ওই এলাকায় তিনজন ইলেকট্রিশিয়ান রয়েছেন। আমরা তাঁদের তিনটি এলাকা ভাগ করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর জিএম নূর মোহাম্মদ আজম মজুমদার বলেন, ওয়্যারিংয়ের বিষয়টি গ্রাহকদের একান্ত ব্যাপার। তাঁরা বিদ্যুৎ বিভাগের যেকোনো ইলেকট্রিশিয়ানকে দিয়ে করাতে পারবেন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। আগামী ৩১ জানুয়ারি উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি আলোচ্যসূচির মধ্যে রাখা হয়েছে। সেখানে জনপ্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’