ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাষ। ফরিদপুর বিএডিসির উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
বৈচিত্র্যময় কৃষির জেলা ফরিদপুর। এ জেলায় প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপন্ন হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরে শুরু হয় অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের চাষ। সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরল মুক্ত। এ তেল শরীরের দুর্বলতা কমিয়ে কার্যক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। যেকোনো তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেল বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ।
সে কারণে দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা। চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে ফরিদপুরেও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ।
ফরিদপুরের নয়টি উপজেলায় প্রায় শতাধিক কৃষক চলতি মৌসুমে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। আর কৃষকেরা আছেন ভালো ফলনের আশায়।
ফরিদপুর সদর উপজেলার হারুকান্দি এলাকার চাষি হুমায়ূন কবির বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম ও অধিক লাভ হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষ করছেন। আর ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরাও ভবিষ্যতে সূর্যমুখী ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী বলেন, এই ফুলের চাষ নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দুবার সেচ দিতে হয়। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
ফরিদপুর ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদুল ইসলাম খান বলেন, দিন দিন চাষিরা সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এই তেলে কোনো কোলেস্টেরল নেই, যে কারণে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবনকাল ও লাভজনক। সে কারণেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, বেশি করে এই ফসলের আবাদ করতে তাঁরা কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন, কারণ এতে চাষিরা বেশি লাভবান হন।