এস. এস শোহান, বাগেরহাট
দাম কম ও প্যাকেটজাত মুড়ির দাপটে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন মুড়িগ্রাম খ্যাত বাগেরহাটের বারুইখালী গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ির কারিগরেরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম না বাড়ায় এবং প্যাকেটজাত মুড়ির বাজারজাতকরণ কৌশলের কাছে হেরে এ পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান অনেক কারিগর। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বাজারজাতকরণে সহযোগিতার মাধ্যমে হাতে ভাজা মুড়ির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময় কচুয়া উপজেলার বারুইখালী গ্রামের শতাধিক পরিবার মুড়ি ভেজে ও বিক্রি করে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু দিনে দিনে হাতে ভাজা মুড়ি তৈরির পরিবারের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। গেল কয়েক বছরে অন্তত ৫০ পরিবার মুড়ি ভাজা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
মুড়ি কারিগর ষাটোর্ধ্ব কমল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘স্ত্রী মমতা রানী সাহা ও প্রতিবেশী অঞ্জলী রানী সাহাকে নিয়ে মুড়ি ভাজি। ৩৫ বছর ধরে হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রির টাকায় সংসার চলছে। কিন্তু বর্তমানে মুড়ির টাকায় আর সংসার চলে না।
আরেক মুড়ি কারিগর কৃষ্ণ কান্ত সাহা বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে বাবার পেশা হিসেবে মুড়ি ভাজি এবং বিক্রি করি। আগে সপ্তাহে দুই হাটে ১০ মন মুড়ি বিক্রি করতাম। যে আয় হতো তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে যেত। পাশাপাশি কিছু সঞ্চয়ও করতে পারতাম। কিন্তু ২ বছর ধরে সবকিছুর দাম বাড়লেও মুড়ির দাম বাড়েনি। অন্যদিকে মেশিনের মুড়ি বাজারে আসার পর আমাদের হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা অনেক কমে গেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সঞ্জিব সাহা বলেন, ‘একটা সময় আমাদের এলাকার অনেকেই মুড়ির ব্যবসা করতেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে বর্তমানে অনেকেই মুড়ি ভাজা বন্ধ করে দিয়েছেন। হাতে ভাজাই এই মুড়ির ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।