নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব জানানো হয়।
১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও রাজস্ব দপ্তর পৃথক বিবৃতিতে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান আইজি এবং র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালকসহ র্যাবের সাত সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তারা হলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনোয়ার লতিফ খান ও র্যাব-৭-এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদ।
এদিকে আইজিপির পক্ষ নিয়ে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসাসূচক পোস্ট দিচ্ছেন। অনেকে আবার এসব পোস্ট শেয়ারও করছেন। এসব পোস্টে লেখা রয়েছে ‘আওয়ার আইকন আওয়ার প্রাইড’। বলা হচ্ছে, আইজিপি দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ এক সন্তান। মাদক ও জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার রূপকার।
পুলিশ সদস্যদের শেয়ার করা একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ওয়ান অব আওয়ার গ্রেটেস্ট সন অব সয়েল’ (মাতৃভূমির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে অন্যতম সন্তান)। তার নিচে লেখা, ‘দ্য কমান্ডার বিহাইন্ড সাসটেইনেবল সিকিউরিটি’ (টেকসই নিরাপত্তার অধিনায়ক)। এসব পোস্টের সঙ্গে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরের টুকরা অংশও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এসব পোস্টের ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভালোবাসার জায়গা থেকে পুলিশ সদস্যরা এসব পোস্ট দিয়েছেন।
এদিকে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের গণমানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সন্ত্রাসবাদ দমন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ এক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থ দপ্তর ও পররাষ্ট্র দপ্তর কর্তৃক বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার ওপর যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বাংলাদেশবিরোধী একটি চক্র, যারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে বিব্রত করতে চায়, দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত করতে চায়—তারাই আন্তর্জাতিক লবিস্ট গ্রুপের সহায়তায় ভুল, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থাকে গোপন করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবিত করেছে।’