ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় জব্দ করা ১২টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিমার দাবি আদায় এবং ব্যাংকঋণের দায় থেকে অব্যাহতি পেতেই বাসগুলোতে আগুন দেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের গোয়ালচামট এলাকা থেকে ওই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন পশ্চিম গোয়ালচামটের ২ নম্বর সড়ক এলাকার জহুরুল ইসলাম জনি (২৪) ও পারভেজ মৃধা (২১) এবং নগরকান্দার লস্করদিয়ার গোড়াইল গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৪১)।
জামাল পাশা আরও জানান, বাস পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় আসামি জনি ও মোহাম্মদ আলী ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। জহুরুল ইসলাম জনি বাসগুলো দেখাশোনা করতেন এবং মোহাম্মদ আলী সেখানকার নৈশপ্রহরী ছিলেন। সোমবার বিকেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া জন্য ১ নম্বর আমলি আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চলতি বছরের ১২ মার্চ রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট বিদ্যুৎ অফিসের পাশে পুলিশি হেফাজতে রাখা সাউথ লাইন নামের ১২টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল প্রায় ঘণ্টাখানেক চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মো. আব্দুল গাফফার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেছেন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরহাদ হোসেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসগুলোর মালিক দুই ভাই বরকত ও রুবেলের নামে ঢাকার কাফরুল থানায় সিআইডির পক্ষ থেকে ২ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করা হয়। ওই মামলায় বাসগুলোকে জব্দ করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনায় পুলিশের গঠিত ৩ সদস্যে তদন্ত কমটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমদাদুল হক জানান, বাসগুলো বিভিন্ন কোম্পানির ইনস্যুরেন্স করা এবং ব্যাংকে দায়বদ্ধ ছিল। এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত জানানো যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটিকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানাতে পারব।’