নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে প্রাইভেট পড়তে বেরিয়ে ২৭ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন ইপিজেড বন্দরটিলা এলাকার প্রণব বড়ুয়ার ছেলে দুর্জয় বড়ুয়া।
জানা গেছে, গত ২১ মে বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রাইভেটে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে আর বাসায় ফেরেনি দুর্জয় বড়ুয়া। এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় একটি নিখোঁজ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, ঘটনার দিন বাসায় ফেরার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। আত্মীয়স্বজনের বাসায় গিয়েও কোনো খোঁজ মেলেনি। তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা চট্টগ্রাম কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ ইউনুচের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বলেন। তবে প্রভাষক ইউনুচ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থানের কথা বলেন।
পরবর্তী সময়ে তিনি হৃদয় নামের তাঁর এক সহপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে অনেক খোঁজ করেও না পেয়ে ইপিজেড থানায় জিডি ও র্যাব-৭-কে জানানো হয়।
দুর্জয়ের বাবা প্রণব বড়ুয়া অভিযোগ করেন, দুর্জয় চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রাইভেট পড়ছিলেন।
এর আগে এইচএসসিতে ওই শিক্ষকের কাছে তাঁর ছেলে প্রাইভেট পড়েছিলেন। বেশ কয়েক মাস আগে তাঁর সহধর্মিণীর কাছে ওই শিক্ষক দুর্জয়কে নিজের কাছে রেখে পড়াশোনা করাবেন বলেছিলেন। তাতে তাঁরা রাজি হননি।
প্রণব বড়ুয়া বলেন, এ কারণে তাঁর ছেলে নিখোঁজের পেছনে ইউনুচের হাত রয়েছে বলে তাঁরা সন্দেহ করেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ ইউনুচ বলেন, ‘তাঁরা কী কারণে আমাকে নিয়ে এসব বলছেন তা আমি বুঝতে পারছি না। তাঁদের দাবি সত্য না। এ বিষয়ে দুদিন আগে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগে গিয়ে আমার বক্তব্য দিয়ে এসেছি। আমাকে জেরা করা হয়েছিল, আমি সে অনুযায়ী বক্তব্য দিয়েছি।’ একই দিন হৃদয় ও জীবন নামের দুর্জয়ের দুই সহপাঠীকেও জেরা করা হয়েছিল।
দুর্জয়ের মামা সরিথ চৌধুরী বলেন, ‘নিখোঁজের পর দুর্জয়ের ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টা শুনেছি। কিন্তু সে কোথায় ও কীভাবে আছে, বেঁচে আছে কিনা তা নিয়ে আমাদের ভয়। তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি।’
সরিথ চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশের কাছে শুনেছি প্রথমে তাঁকে লালখানবাজারে একটি মাদ্রাসায়, পরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর কোথায় গেছে বলতে পারছে না পুলিশ। তাঁকে খোঁজার চেষ্টা চলছে। পুলিশ কয়েক দিন তৎপর থাকলেও এখন ঢিলেমি ভাব দেখা যাচ্ছে।’
পুলিশের কাউন্টার টেররিজমের উপকমিশনার মো. ফারুক উল হক বলেন, ‘দুর্জয়ের নিখোঁজের বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছি।