কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ঠিকাদারদের কাছে ভাড়া দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়টির মাঠ ভরে রাখা হয়েছে ইট খোয়াসহ নানা ধরনের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। প্রতিদিনই মেশিন দিয়ে এসব ইট ভাঙা হচ্ছে। আর এই মেশিন দিয়ে ইট ভাঙার শব্দে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও গ্রহণে বিঘ্ন ঘটছে। এর ফলে বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নাগরা-বান্ধাবাড়ি-রাশমীল সড়ক নির্মাণকাজের সামগ্রী রাখার জন্য বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটি ঠিকাদারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিনিময়ে ওই ঠিকাদার ৭ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. কামাল হোসেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয় ও বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রয়েছে। এই দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই মাঠটিতে খেলাধুলা করে। মাঠটিতে নির্মাণ সামগ্রী রাখার কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। আর বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মেশিন দিয়ে ইট ভাঙার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণেও সমস্যা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিদ্যালয় মাঠে ইট খোয়া রাখার কারণে আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না। এ ছাড়া বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে মেশিন দিয়ে ইট ভাঙা হয়। এতে আমাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের যে মাঠটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে সেটি আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ব্যবহার করে না। ওই মাঠটি আমাদের হলেও বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে।
তিনি আরও বলেন, মাঠটিতে কিছুদিনের জন্য নাগরা-বান্ধাবাড়ি-রাশমীল সড়ক নির্মাণকাজের সামগ্রী রাখার জন্য মো. জসিমউদ্দীন নামে এক ঠিকাদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা ও ১টি সিসি টিভি মনিটরের বিনিময়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখানে ৭ লাখ টাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন।
বান্ধাবাড়ি হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক সবুজ ঘরামী বলেন, ‘আমরা শুনেছি ঠিকাদারের কাছ থেকে বান্ধাবাড়ি জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হান্নান মোল্লা ও প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রশিদ ৭ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই অর্থের বিনিময়ে মাঠ ভাড়া দেওয়ার কারণে বিদ্যালয় দুটোর শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’
ঠিকাদার মো. জসিমউদ্দীন বলেন, ‘আমি ৩ মাসের জন্য মাঠটি ভাড়া নিয়েছি। বিনিময়ে বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ১টি সিসি টিভি মনিটর দিতে হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ ভাড়া দেওয়ার কোনো বিধান নেই। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।