দেবিদ্বার প্রতিনিধি
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি। এতে ২ হাজার ৭৯৩ হেক্টর রবি শস্যের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুর রউফ।
উপজেলার মোহনপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধানের আগাম বীজতলা, আলু, মসুরসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজিখেত। এ সময় কথা হয় স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, এবার শাকসবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে তাঁর স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। চারা ছোট থাকায় পানি জমে পচে গেছে। বর্তমানে তিনি আবার আবাদ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু এবং ৭৫০ হেক্টরে নানা ধরনের সবজি আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে মুলা ৫৬ হেক্টর, লালশাক ৭৫ হেক্টর, ডাঁটা ৫৪ হেক্টর, লাউ ৭০ হেক্টর, ফুলকপি ৯৬ হেক্টর, বাঁধাকপি ৬০ হেক্টর, টমেটো ৮০ হেক্টর, পালংশাক ২৫ হেক্টর, শসা ২৫ হেক্টর, করলা ৩০ হেক্টর, ঢ্যাঁড়স ৩৬ হেক্টর, কাঁচা মরিচ ৬৫ হেক্টর, ধনিয়া পাতা ৮৫ হেক্টর, পেঁয়াজ ২০ হেক্টর, রসুন ১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ১৫ হেক্টর ও ১২টি বিষমুক্ত সবজির প্রদর্শনীসহ ২ হাজার ৭৯৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
মোহনপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. বারেক মির্জা, মো. আলী হোসেন, মো. নাজমুল হাসান, মো. রুবেল মির্জা বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তাঁরা মাঠে এবার প্রায় দুই একর জমিতে আলু চাষ, এক একর জমিতে ফুল কপি ও দুই একর জমিতে মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করেছিলেন। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে সবই এখন পানির নিচে। তাঁরা জানান, তাঁরা ক্ষুদ্র কৃষক। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবাদ করেছিলেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘কৃষকের আগাম আলু ও শাক-সবজিখেত বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের সহায়তা করছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমাদের মাঠপর্যায়ের কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা ক্ষতির পরিমাণ কত তা নিয়ে কাজ করছেন। তবে জমিতে পানি আটকে থাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকার থেকে ভর্তুকির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।’