আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি পশুর হাটে গরু-মহিষ কেনাবেচার খাজনা ৫০০ নির্ধারণ করা হলেও আদায় করা হচ্ছে ৭৫০ টাকা। ছাগলে আদায় করা হচ্ছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বেতগাড়ী হাট ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকায় ডাক হয়। এ বছর ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় ডাকা হয়েছে। সরকারিভাবে হাটটি ইজারা নির্ধারণ করা হয় ২ কোটি ৬৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ টাকা। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বেশি দামে ডাক হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণে হাটটি চড়া দামে ডাকা হয়েছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গরু-মহিষে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা, ছাগল-ভেড়ার জন্য ১৫০ টাকা খাজনা নির্ধারণ করা হয়। গবাদিপশুর ক্ষেত্রে শুধু ক্রেতার খাজনা দেওয়ার কথা।
তবে বেতগাড়ী বাজারে দেখা গেছে, গরু-মহিষের জন্য ৭৫০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। ক্রেতার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫০০ ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২৫০ টাকা। ছাগল-ভেড়ায় নেওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে খাজনার রশিদে টাকার পরিমাণ লেখা হয় না।
হাটে আসা আলমবিদিতর ইউনিয়নের মজিবর রহমান বলেন, ‘৩০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরুর বাছুর কিনলাম, গরু কেনার জন্যে হাট ইজারাদারের লোকদের ৫০০ টাকা দেয়া লাগল। গরু যে বিক্রি করিল, তাঁর কাছে নিল ২৫০ টাকা। বাজার কি ইজাদারের লোকজন গরিব মারা ফান বসাইছে নাকি?’ একই কথা বলেন আরিফুল নামের আরেক ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘গরু কষ্ট করি পুষিপালি বাজার আসি বিক্রি করি। কয় টাকা হয় হোক, ইজারাদারের লোকদের দেয়া লাগে ৫০০ টাকা, ভাইরে গরিবের ভালো একটেও নাই।’
বেতগাড়ি পশুর হাটে খাজনা আদায়ের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, ‘অন্য বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বেশি পরিমাণে খাজনা আদায় করা হচ্ছে, শুনেছি এ বছরে নাকি সরকার রশিদের দাম বাড়াইছে, এ কারণে বেশি নেওয়া হচ্ছে।’
বেতগাড়ি পশুর হাটের ইজারাদারের পক্ষ থেকে তদারকিতে থাকা এনামুল হক বেশি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কি বেশি খাজনা আদায়ের টাকা একাই খাই? এখানকার মসজিদ, মাদ্রাসা, দলের ছেলে, পুলিশ-প্রশাসন সবাইকে দিয়ে খাই। কিছুদিন আগে এখানকার ছাত্রসমাজের ছেলেরা এসে একটি খাসি নিয়ে গেছে, এই টাকা কোথা থেকে আসে। ঈদ এলে সবাইকে খাসি পাঠাতে হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ উদ্দিন বলেন, ‘অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ইজারাদারেরা অবৈধভাবে বেশি টাকা আদায় করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’