শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
উদ্বোধনের অপেক্ষায় গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ। আগামী এপ্রিলে উদ্বোধন হবে এই তিনটি প্রকল্প। প্রকল্পের গড় ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ।
এই প্রকল্পের এখন পর্যন্ত চার দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। ইতিমধ্যে প্রকল্পের তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেডিকেল কলেজ নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ শেষ হয়েছে। নির্মাণ শেষ হওয়ায় ২০২১ সালের মাঝামাঝি হস্তান্তর করা হয়েছে মেডিকেল কলেজ। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি হস্তান্তর হয়নি। এর ভৌত অগ্রগতি রয়েছে ৯৯.৭০ ভাগ; কিন্তু এখনো চলমান রয়েছে নার্সিং কলেজ নির্মাণের কাজ। তবে আগামী এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পটির কাজ।
প্রকল্প পরিচালক ডা. অসিত কুমার মল্লিক জানান, প্রকল্পের মোট ৫২টি ভবনের মধ্যে ৪৩টির নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে মেডিকেল কলেজটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মূল মেয়াদের মধ্যেই আগামী এপ্রিলে প্রকল্পটির কাজ শেষ করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পে মোট নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৬৩৩ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৯৩.০১ শতাংশ এবং গড় ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। মেডিকেল কলেজ হস্তান্তর হয়েছে ২০২১ সালে। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবনের অগ্রগতি ৯৯.৭০ ভাগ। নার্সিং কলেজের অগ্রগতি ৬৮ ভাগ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ করা হবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন প্রকল্প পরিচালক।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ২০১১ সালে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ৫২টি আসন নিয়ে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৬৫ জন করে পাঁচটি ব্যাচে মোট ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এর মধ্যে একটি ব্যাচ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্ন বা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল কলেজের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় ২০২১ সালের মাঝামাঝি নিজস্ব ক্যাম্পাসে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়।
শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ স্থাপন করা হয়েছে; কিন্তু এখনো কোনো অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। মোট ৫০৭টি পদে ডাক্তার, নার্স, তৃতীয় শ্রেণি, চতুর্থ শ্রেণি ও আউটসোর্সিংয়ে জনবল থাকার কথা রয়েছে; কিন্তু নিয়োগ করা হয়েছে মাত্র নয়জনকে। বাকি ৪৯৮টি পদই শূন্য রয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এবং ওষুধ সরবরাহ করা হলেই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।
গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার কে এম হাসান উজ জামান বলেন, ২০১২ সাল থেকে মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসংলগ্ন এই প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৩৬ একর জমির অধিগ্রহণ করতেই সময় লেগে যায় ছয় বছর। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ পর্যন্ত চার দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। অন্যদিকে কাজ চলমান অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর মৃত্যু হয়। যে কারণে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। ফলে নার্সিং কলেজের নির্মাণকাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে।