ক্রীড়া ডেস্ক
‘এল বার্সা দিমাইত দি লা এলিত’—স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক ‘দিয়ারিও এএসের প্রধান খবরের শিরোনাম। যেটার বাংলা অর্থ এক ফুটবল পরাশক্তির পতন। কতটা দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে পত্রিকাটি শিরোনাম দিয়েছে, কে জানে! তবে শিরোনামটি বার্সেলোনা সমর্থকদের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছে, সেটি না বললেও চলে।
দুঃসময় বয়ে বেড়ানো বার্সা শঙ্কা সত্যি করে ছিটকেই গেল উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে। আলিয়াঞ্জ এরিনায় পরশু রাতে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে ৩-০ গোলে আত্মসমর্পণ করেছে তারা। একই রাতে গ্রুপের অন্য ম্যাচে দিনামো কিয়েভকে ২-০ গোলে হারিয়েছে নকআউটে বায়ার্নের সঙ্গী হয়েছে বেনফিকা।
‘ই’ গ্রুপ থেকে আগের পাঁচ ম্যাচ জিতে সেরা হয়েই শেষ ষোলোর টিকিট কেটে রেখেছিল বায়ার্ন। এ ম্যাচে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের হারানোর কিছু ছিল না। অনেকে ভেবেছিলেন, তারকাদের বিশ্রামে রেখে বার্সাকে একটু হলেও ছাড় দেবে স্বাগতিকেরা। তবে হলো তার উল্টোটা। বার্সাকে ছেড়ে কথা বলল না বায়ার্ন। গত বছর থেকে জেরার্দ পিকে-সার্জিও বুসকেটসদের নিয়ে যেভাবে ছেলেখেলায় মেতেছে বায়ার্ন, সেটির ধারা বজায় রাখল এ রাতেও। শেষ তিন ম্যাচে কাতালানরা বাভারিয়ানদের কাছে গোল হজম করল ১৪টি! পরশু থমাস মুলারের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লেরয় সানে ও জামাল মুসিয়ালার গোলে জয় নিশ্চিত হয় জার্মানির সফলতম ক্লাবটির। প্রথম লেগের ম্যাচেও তাদের বিপক্ষে একই ব্যবধানে হেরেছিল বার্সা।
এ হারে দুই দশক পর ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে নকআউট পর্বে উঠতে ব্যর্থ বার্সেলোনা। নেমে গেছে উয়েফার দ্বিতীয় স্তরের টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগে। অথচ ফুটবল আভিজাত্যের প্রতিযোগিতায় অর্ধযুগ আগেই লিওনেল মেসি-নেইমার জুনিয়র-লুইস সুয়ারেজদের নিয়ে গড়া দলটি ছিল সেরাদের সেরা। তাঁদের হারিয়ে ক্লাবের এমন দুরবস্থা তো অধঃপতনের মতোই!
২০০০-০১ মৌসুমে শেষবার এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার স্বাদ পেয়েছিল বার্সেলোনা। সেবার জাভি হার্নান্দেজ ছিলেন দলটির তরুণ খেলোয়াড়, এবার প্রধান কোচ। বিদায় নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সে অভিজ্ঞতার কথাই বললেন জাভি, ‘যখন খেলোয়াড় ছিলাম, তখনই কঠিন বাস্তবতা দেখেছি। এবারও আমরা আপস করতে পারিনি, আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। এটাই বাস্তবতা। বার্সেলোনার যা প্রাপ্য, সেখানে ফিরিয়ে আসতে কাজ শুরু করতে হবে। আমি এ আশা নিয়েই আছি। আমরা মর্যাদার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। আজ (পরশু) একটি নতুন যুগ ও নতুন পর্যায়ের শুরু হলো।’
এভাবে ছিটকে পড়ার দায় নিজ কাঁধে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটসের। তিনি দায় স্বীকারও করলেন, ‘(এবারের আসরে) কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা খেলায় তালগোল পাকিয়ে ফেলেছি। এর জন্য নিজেরাই দায়ী।’
রোনালদোহীন ম্যানইউয়ের ড্র
‘এফ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউট পর্বে ওঠা নিশ্চিত করে রেখেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে তাই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোসহ সব বড় তারকাদের বিশ্রামে রেখেই ইয়াং বয়েজের বিপক্ষে দল সাজিয়েছিলেন নতুন কোচ রালফ রাংনিক। খর্বশক্তির দল নিয়েও ম্যাসন গ্রিনউডের গোলে নবম মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল ম্যানইউ। তবে বিরতির ঠিক আগে সেই গোল শোধ করেন ইয়াং বয়েজের ফাবিয়ান রিডার। দ্বিতীয়ার্ধে কেউ জালের দেখা পায়নি। ম্যাচ শেষ হয়েছে ১-১ সমতাতেই।