কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জকে শতভাগ বিদ্যুতের উপজেলা ঘোষণা করা হয়। অথচ খাসিয়া পুঞ্জিসহ পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার এখনো বিদ্যুৎ পায়নি। বিদ্যুৎ না থাকায় নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ পরিবারগুলো।
জানা গেছে, উপজেলার আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি, কুরুঞ্জি গ্রাম, কোনাগাঁও গ্রাম, কুরমা পুঞ্জি ও তৈলঙ্গছড়ার ত্রিপুরা গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ এখনো দেওয়া হয়নি। এসব এলাকা সংরক্ষিত বনের আওতাধীন হওয়ায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত বনে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের জন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হয়। কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জি ও কুরুঞ্জি গ্রামের বিদ্যুৎবিহীন বাসিন্দারা বলেন, আমাদের এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়নি। অথচ মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এই উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করেছে অনেক আগেই। বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের ৩০০ পরিবারের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুম নলকূপে পানি থাকে না। আমরা অনেক দূর থেকে খাবারের পানি সংগ্রহ করি। আমাদের সন্তানেরা ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারে না। সেচের অভাবে ফসলও উৎপাদন হয় না।
সিলেট আদিবাসী ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী জিডিসন প্রধান সুচিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘ চার বছর ধরে আমরা বিদ্যুতের দাবি করে আসছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনে না। বন এলাকা ও অন্যান্য পুঞ্জিতে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে তখন কোনো সমস্যা হয়নি। শুধু এসব এলাকায় সমস্যা বন বিভাগের।’
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মীর গোলাম ফারুক বলেন, ‘কালেঞ্জি খাসিয়া পুঞ্জিসহ অন্যান্য পুঞ্জিগুলো আমরা বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে চাই। কিন্তু বন এলাকা থাকায় বন বিভাগের ছাড়পত্র না থাকায় বিদ্যুতায়ন করা যাচ্ছে না।’
ইউএনও সিফাত উদ্দিন বলেন, ‘বন বিভাগের অনুমোদন না থাকার কারণে এই এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। সমস্যা সমাধানের জন্য আমার পক্ষে থেকে চেষ্টা করব।’
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খাসিয়া পুঞ্জির সংশ্লিষ্টরা পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের অনুমতি নিয়ে এলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’