যশোর প্রতিনিধি
রমজান উপলক্ষে যশোরের ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ পরিবার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) খাদ্যপণ্য পাবে। প্রতিটি আট কেজি করে দুই দফায় ১৬ কেজি খাদ্যপণ্য পাবে। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি চিনি ও দুই কেজি ছোলা। ইতিমধ্যে টিসিবির পণ্য দেওয়ার জন্য অসচ্ছল পরিবারের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ তালিকা করা হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করবে জেলা প্রশাসন। জেলায় চার ধরনের পণ্যের জন্য চার কোটি ৮১ লাখ তিন হাজার ৬৫০ টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি তেল ১৯০ টাকা, মসুর ডাল ১২০ টাকা, চিনি ৮৫ টাকা ও ছোলা ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই জায়গায় টিসিবি তেল ১১০ টাকা, ডাল ৬৫ টাকা ও চিনি ৫৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করবে। সব মিলিয়ে প্রতি প্যাকেটে ক্রেতার সাশ্রয় হবে ৩৬০ টাকা। দুই দফায় একটি পরিবারে বাঁচবে ৭২০ টাকা।
যশোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজিবুল ইসলাম জানান, টিসিবি থেকে প্রত্যেক পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকবে দুটি প্যাকেট। প্রতি প্যাকেটে থাকবে আট কেজি নিত্যপণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে দুই কেজি সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি চিনি ও দুই কেজি ছোলা। প্রতি পরিবার দুই দফায় সমপরিমাণের দুটি প্যাকেট পাবে।
ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিম্নবিত্ত মানুষকে অর্থনৈতিক সাশ্রয় দিতে সরকার টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে সারা দেশে এক কোটি পরিবারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে।’
সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব আরও বলেন, ‘১৫ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে প্রথম দফায় এবং রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় দফায় এসব পণ্য দেওয়া হতে পারে। যশোরে টিসিবির ৭৩ জন ডিলার রয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে এসব পণ্য সরবরাহ করা হবে।’
যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান বলেন, ‘যশোরে এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ জনকে দুই দফায় ভর্তুকি দিয়ে কম মূল্যে খাদ্যের প্যাকেট বিতরণ করা হবে। এসব পণ্য দিতে বাজার মূল্যে খরচ হবে ১২ কোটি ৯১ লাখ ৯২ হাজার ৬৬০ টাকা। আর এই পণ্য দিতে টিসিবিকে ভর্তুকি দিতে হবে চার কোটি ৮১ লাখ তিন হাজার ৬৫০ টাকা। সে হিসেবে যশোরে সয়াবিন তেলে দুই কোটি ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার ২০, মসুর ডালে ৯৬ লাখ ২০ হাজার ৭৩০, চিনিতে ৮২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৪০ ও ছোলায় ৫৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬০ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যরা ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং পৌরসভা এলাকায় কাউন্সিলররা সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করছেন। এ তালিকা অনুযায়ী প্যাকেট তৈরি করবে জেলা প্রশাসন। প্যাকেট করার কাজ শেষ হওয়ার পর তা যাবে টিসিবি ডিলারদের হাতে। ডিলাররা জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী প্যাকেট পৌঁছে দেবেন তালিকাভুক্তদের কাছে।
রফিকুল হাসান আরও বলেন, ‘টিসিবির এসব পণ্য বিক্রির কাজ সম্পন্ন করতে আরও সভা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে, কোন প্রক্রিয়ায় সুবিধাভোগীরা এসব প্যাকেট পাবেন।’