রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে বেড়েছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা। নির্বাচনী প্রচারে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখে তাঁদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।
এদিকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও তাঁর প্রতিদ্বন্দী বিদ্রোহী প্রার্থী পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা-ছোড়াছুড়িতে মেতেছেন। এ দুজন ছাড়াও চেয়ারম্যান পদে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দীপক কুমার কুন্ডু এবং স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমামুজ্জামান চৌধুরী রিটো। এ কে এম শফিকুল মোরশেদ আরুজ বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী দীপক কুন্ডুর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তিনি বালুদস্যু, অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করেন। যে কারণে তিনি অবৈধ টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন। এটা নির্বাচন আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন। প্রশাসনকে জানিয়েছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী দীপক কুন্ডুর অভিযোগ, শফিকুল মোরশেদ আরুজের লোকজন তাঁর পোস্টার, বিলবোর্ড ছিঁড়ে ফেলছে। তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারে বাধার সৃষ্টি করছে। ফেসবুকে ফেক আইডি খোলে তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ ছাড়া সংসদ সদস্যদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ থাকলেও রাজবাড়ী-১ ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্যরা বিধি ভেঙে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমামুজ্জামান চৌধুরী রিটোর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, ‘দীপক কুন্ডুর বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শহরে তাঁর একাধিক বাসা রয়েছে। একেক বাসায় তিনি একেক নারী নিয়ে রাত কাটান।’ তিনি আরও বলেন, ‘দীপক কুন্ডু রাজবাড়ীতে অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করেন। ব্যবসার টাকা ভারতে পাচার করেন। এ দেশে তাঁর আত্মীয়স্বজন কেউ নেই। তাঁর স্ত্রী-সন্তান থাকেন ভারতে। দীপক কুন্ডু পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জানা গেছে, ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার ৫টি উপজেলায় ৩টি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৯৮ জন।
রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু কায়সার খান বলেন, দুজন সংসদ সদস্যের বিষয়ে এক প্রার্থী যে অভিযোগ করেছেন, সে বিষয়ে তাঁদের মৌখিকভাবে সতর্ক ও আচরণবিধি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।