সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট অঞ্চলে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিংয়ের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। দিনের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না অধিকাংশ এলাকায়। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
শিডিউল মানতে না পারার কথা স্বীকার করেন সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বুধবার (গতকাল) সকালে আমাদের চাহিদা ছিল ৭২, দুপুরে ৭৭ ও বিকেলে ৮১ মেগাওয়াট। সরবরাহ পেয়েছি সকালে ৪৫, দুপুরে ৫৪ ও বিকেলে ৪৯ মেগাওয়াটের মতো। ফলে অর্ধেকের মতো সরবরাহ পাচ্ছি। এমন হলে তো ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করতেই হবে।’
এই কর্মকর্তা বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম পাওয়ায় শিডিউলও রক্ষা করা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ‘লোড একটু বেশি হয়ে গেলেই গ্রিড লাইন থেকে ফোন করে লোড কমাতে বলে। তাদের কথামতো সঙ্গে সঙ্গে না কমালে আমাদের পুরো সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। ফলে আমরাও অসহায় আসলে। জনগণের দুর্ভোগ হচ্ছে বুঝতে পারছি, কিন্তু কিছু করতে পারছি না।’
একইভাবে বলেন সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক সঞ্জীব কুমার রায়ও। তিনি বলেন, ‘বুধবার (গতকাল) সকালে আমাদের চাহিদা ছিল ২৫ মেগাওয়াট। সরবরাহ পেয়েছি ১৪ মেগাওয়াটের মতো।’
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২ এর আওতাধীন এলাকা নয়, এই চিত্র পুরো সিলেটের। প্রথম দিন থেকেই মানা হচ্ছে না এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের শিডিউল। বরং শিডিউলে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি লোডশেডিং করা হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গ্রাহকেরা।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেটেও প্রথম দিনেই এলাকাভেদে ৩/৪ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের সময় নির্ধারণ করে শিডিউল তৈরি করে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে প্রথম দিন থেকে নিজেদের তৈরি এই শিডিউল মানতে পারছে না তারা।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া বেগম। সুমাইয়া জানায়, কয়েক দিন ধরে সন্ধ্যা হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত থাকে না।
এদিকে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। এসব এলাকায় পিক আওয়ারে বিশেষত রাতে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে।
শিডিউল বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদিরও। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাহিদার ৭০ শতাংশ সরবরাহ ধরে শিডিউল করতে বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী আমরা এলাকাভেদে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং রেখে শিডিউল করেছিলাম। কিন্তু এখন অর্ধেক সরবরাহই পাচ্ছি না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিডিউল মানতে পারছি না।’