আবদুল আযীয কাসেমি
যা সত্য বিরোধী, তা-ই মিথ্যা। মিথ্যা অন্ধকার, মূর্খতা, ধোঁকা ও প্রতারণার শামিল। মিথ্যা এত ভয়াবহ একটি বদঅভ্যাস, সেটা একাই অসংখ্য পাপকে ধারণ করে। একটি সুন্দর পরিবার, প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস হওয়ার জন্য এই একটি বদাভ্যাসই যথেষ্ট। মিথ্যুক মানে কপট, প্রতারক। একজনের কাছে এক কথা বলবে তো আরেকজনের কাছে বলবে ভিন্ন কথা। মিথ্যা দিয়ে মানুষের জীবন নিয়েও ছিনিমিনি খেলা যায়। কত মানুষ জেলের নিষ্ঠুর চার দেয়ালে ধুঁকে ধুঁকে মরছে মিথ্যা মামলার ফাঁদে পড়ে। ব্যবসায়ীদের দল মিথ্যা দিয়ে কামিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গড়ছে টাকার পাহাড়। গরিবের রক্তচোষা অর্থ দিয়ে তৈরি হচ্ছে বড় বড় অট্টালিকা।
একজন মুমিন কখনো মিথ্যুক হতে পারে না। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘মুমিনের মধ্যে মানুষসুলভ সকল প্রকারের দোষগুণ থাকতে পারে—মিথ্যা আর বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অন্য হাদিসে এসেছে, সাফওয়ান ইবনে সুলাইম থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে?’ নবী (সা.) বললেন, ‘হতে পারে।’ আবার প্রশ্ন করা হলো, ‘মুমিন কি কৃপণ হতে পারে?’ তিনি বললেন, ‘হতে পারে।’ এবার জিজ্ঞেস করা হলো, ‘মুমিন কি মিথ্যুক হতে পারে?’ তিনি বললেন, ‘মুমিন কখনো মিথ্যুক হতে পারে না।’ (মুআত্তা ইমাম মালিক)
এ হাদিসগুলো থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, মুমিনের মধ্যে এ বদাভ্যাস থাকাটা কোনোভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। যাদের মধ্যে এ বদাভ্যাসটি আছে, খুব দ্রুতই এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। এগুলো আত্মিক অসুখের অন্তর্ভুক্ত। শারীরিক অসুখ-বিসুখের মতো এই অসুখের চিকিৎসা করাও আবশ্যক।
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক