নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সেবা প্রকাশনীর মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি এবং কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখকস্বত্ব শেখ আবদুল হাকিমের বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ রায় দেন। কাজী আনোয়ার হোসেনের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুল খারিজ করে এবং কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তের ওপর থাকা স্থগিতাদেশ বাতিল করে এ রায় দেওয়া হয়।
মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখকস্বত্ব দাবি করে আবদুল হাকিম কপিরাইট অফিসে আবেদন করেছিলেন। আবেদনে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গত বছরের ১৪ জুন কপিরাইট অফিস সিদ্ধান্ত দেয়, যাতে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি এবং কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমকে স্বত্বাধিকারী ঘোষণা করা হয়।
কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত বছরই হাইকোর্টে রিট করেন কাজী আনোয়ার হোসেন। সে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন। কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। রুল শুনানিতে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে গতকাল সোমবার সেই রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। ফলে কপিরাইট অফিসের দেওয়া সিদ্ধান্তই বহাল থাকল বলে জানান আইনজীবীরা। তবে এই আইনি লড়াই চলার মধ্যেই গত ২৮ আগস্ট মারা গেছেন শেখ আবদুল হাকিম।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম হামিদুল মিসবাহ। কপিরাইট অফিসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও ইফতাবুল কামাল অয়ন। আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ বলেন, ‘আদালত মালিকানা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। আবেদনকারী কপিরাইট আইনের অধীন জেলা বা দায়রা আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, শেখ আবদুল হাকিম এই রিটের গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু তাঁকে রিটে পক্ষই করা হয়নি। এ মামলায় একজন অ্যামিকাস কিউরি রাখা হয়েছিল। তিনিও বলেছেন, আবদুল হাকিমকে পক্ষ করা উচিত ছিল। আদালত রিট ও রুল খারিজ করে রায় দিয়েছেন।