আবদুল আযীয কাসেমি
গোপন ধনভান্ডারের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আদিকাল থেকেই। এর রহস্য উদ্ধারে কত মানুষই জীবন বিসর্জন দিয়েছে। পার্থিব ধনভান্ডারের প্রতি যদি আমাদের এত আকর্ষণ থাকে, তবে জান্নাতের গোপন ধনভান্ডারের সন্ধানে আমাদের আগ্রহ কেমন হওয়া উচিত। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সন্ধান দিয়েছেন তেমনই এক মহামূল্যবান রত্নভান্ডারের।
হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, নবী (সা.) একদিন আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে জান্নাতের একটি গোপন ধনভান্ডারের সন্ধান দেব?’ তিনি বললেন, ‘অবশ্যই হে আল্লাহর রাসুল।’ নবী (সা.) বললেন, ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ—হলো জান্নাতের অন্যতম একটি ধনভান্ডার। এই একটি মাত্র বাক্যে কী অপূর্ব ভঙ্গিতে তিনি আমাদের জানালেন বিষয়টি।’
ইমাম নববি (রহ.) এই বাক্যের তাৎপর্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘এতে রয়েছে কিছু অসাধারণ ভাব ও মর্ম। এ বাক্য উচ্চারণ করে বান্দা নিজেকে মহান আল্লাহর কাছে সঁপে দেয়। নিজের অক্ষমতার দ্বিধাহীন স্বীকৃতি প্রদান করে। স্বীকার করে, তাঁর অনুমতি ছাড়া কোনো কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা কারও নেই। তাঁর আদেশকে উপেক্ষা করবে এমন সাধ্য নেই কারোরই। আর একে গোপন ধনভান্ডার আখ্যা দেওয়ার কারণ হলো, এ দোয়াটি পাঠের সওয়াব ও পুণ্য জান্নাতে সংরক্ষণ করা হবে। সেই সওয়াব হবে খুবই মূল্যবান, যেভাবে মূল্যবান হয়ে থাকে গোপন রত্নভান্ডার।’
বাক্যের অর্থের প্রতি মনোযোগ দিলে এর অসাধারণত্বের ব্যাপারটি বোঝা যায়। বাক্যের অর্থ হলো, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোনো স্পন্দন এবং কোনো শক্তিই কার্যকর হতে পারে না। ইবনে আব্বাস (রা.) খানিকটা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, আল্লাহর তৌফিক ছাড়া ইবাদত সম্পন্ন করার কোনো সামর্থ্য এবং গুনাহ ত্যাগ করার সক্ষমতা কোনো বান্দার নেই। দোয়াটির মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে এবং আল্লাহ তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন।