আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
আকাশ ছুঁই ছুঁই পাহাড়। পাহাড়জুড়ে ঘন জঙ্গল। অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা পর্যটন স্পটের ছড়াছড়ি খাগড়াছড়ি। আর মেঘের ছোঁয়ায় শরীর ও মনজুড়ানো মেঘকন্যায় পরিণত হওয়া রাঙামাটির সাজেক। বছরের প্রায় সময় সরগরম থাকা এই দুই পর্যটন এলাকা এক সপ্তাহ ধরে সুনসান।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং পরে কারফিউয়ে সাজেক ও আলুটিলায় এখন সুনসান নীরবতা। ফলে পর্যটন ঘিরে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০০ হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্টে অগ্রিম বুকিং নেই। পর্যটক বহনকারী শতাধিক গাড়ির চাকাও অচল। এসব প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনের পাঁচ সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারী অলস সময় পার করলেও মালিকপক্ষকে গুনতে হচ্ছে বেতন-ভাতা। এতে বাড়ছে লোকসান।
হোটেল-মোটেল সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পর্যটকেরা আসছেন না এসব স্পটে। এতে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা লোকসান গুনছেন পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্ক, তৈদুছড়া ঝরনা, রিছাং ঝরনা, মায়াবিনী লেক, মানিকছড়ির মংরাজবাড়ি, আন্তর্জাতিক ভাবনাকেন্দ্র, ডিসি পার্ক, পানছড়ির রাবার ড্যাম ও অরণ্য কুঠির এখন জনমানবহীন।
অন্যদিকে রাঙামাটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র সাজেকের চিত্রও একই। দিন দশেক আগেও যেখানে আগাম বুকিং ছাড়া রাত কাটানো ছিল দায়, এখন সেখানে পর্যটকের প্রহর গুনছেন শ্রমিক-কর্মচারী ও মালিকপক্ষ।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকে নিয়মিত পর্যটক পরিবহনকারী চান্দের গাড়ির (জিপ) চালক মংশে মারমা বলেন, ‘১৬ জুলাই থেকে পর্যটক আসা-যাওয়া বন্ধ থাকায় আমার গাড়ির চাকাও অচল। এতে পরিবহন-সংশ্লিষ্ট সবার ভাত জোটানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
সাজেক কটেজের মালিক ও মালিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মো. ইব্রাহিম বলেন, সারা দেশে চলমান শাটডাউন ও কারফিউ জারির কারণে সাজেকে কোনো হোটেল-মোটেলে রুম বুকিং নেই, পর্যটক নেই। এখানকার ১২৫টি রিসোর্ট, হোটেল, রেস্তোরাঁয় দৈনিক লোকসান প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া খাগড়াছড়ির আরও অন্তত ১৫০টি রিসোর্ট, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, তা হিসাব করা কঠিন। এতে পাহাড়ে পর্যটন খাত বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।