শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
যেখানেই উপযুক্ত ফাঁকা জায়গা পান, সেখানেই রোপণ করেন গাছের চারা। ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণের পাশাপাশি বহন করেন বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বীজও। এই বৃক্ষপ্রেমীর নাম মো. দেলোয়ার হোসেন।
তিনি গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শিক্ষা ও আইসিটি শাখার উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দুই পাশ এবং শহরের লেকপাড়সহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে সাত বছর ধরে নিজ খরচে গাছের চারা রোপণ করে আসছেন দেলোয়ার। নিজ কর্মস্থল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও করেছেন একটি ছাদবাগান। গাছের চারা লাগানোই তাঁর নেশা।
জানা গেছে, সাত বছর আগে তাঁর স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ভেষজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। এরপর থেকেই ঔষধিসহ নানা প্রজাতির গাছের চারা রোপণের নেশা পেয়ে বসে দেলোয়ারকে। এ পর্যন্ত দেড় লক্ষাধিক গাছের চারা ও বীজ রোপণ করেছেন তিনি।
সুযোগ পেলে গাছের চারা লাগাতে চান সারা দেশে। তাঁর এ কাজ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে শামিল হয়েছেন গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শুকলাল বিশ্বাস।
বৃক্ষপ্রেমী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য এসব গাছ আজীবন রোপণ করে যাব। দেশের প্রত্যেক মানুষকে অন্তত ১০টা করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানাই।’
সহযোগী অধ্যাপক শুকলাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমি দেলোয়ার ভাইর কাজে উদ্বুদ্ধ হই। দেলোয়ার ভাইয়ের মতো এত নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিকে পেয়ে আমি আসলে খুবই খুশি। তাঁর মতো অনেককেই এগিয়ে আসা উচিত এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য। কেউ নিজে না থাকলেও দেলোয়ার ভাইকে আর্থিকভাবেও সহায়তা করতে পারেন বলে আমি মনে করি।’
গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. গোলাম কবির বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের উপপ্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন ঔষধি ও বড় বড় গাছের চারা লাগাচ্ছেন, মানুষকে গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করছেন। পরিবেশের বিপর্যয় রোধের জন্য বৃক্ষরোপণ জরুরি। এ মহৎ কাজে আমরা তাঁকে উৎসাহ দিই। আসুন, আমরা সবাই দেলোয়ারের মতো বৃক্ষকে ভালোবেসে ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করি।’