অনলাইন ডেস্ক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিচ্ছে ব্রাজিল। প্ল্যাটফর্মটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা দেওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির আদালত। বিবিসির প্রতিবদেন এসব তথ্য জানা যায়।
ব্রাজিলের বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে ডি মোরাইস বলেছেন, এক্সের কার্যক্রম ‘তাৎক্ষণিকভাবে পুনরায় চালু’ করার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। তবে এর আগে প্ল্যাটফর্মটি বড় অঙ্কের জরিমানা পরিশোধ করেছে এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে কিছু অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাইটটি মোট ২৮ মিলিয়ন ব্রাজিলিয়ান রেইস বা ৫ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার জরিমানা পরিশোধ করেছে এবং ব্রাজিলের আইন অনুযায়ী একটি স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এক্স।
২০২২ সালে ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কিছু প্রোফাইল ব্লক করতে অস্বীকার করায় ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মটির ব্রাজিলে নিষিদ্ধ করে বিচারক অ্যালেক্সান্দ্রে ডি মোরায়েস। এছাড়া ব্রাজিলে স্টারলিংক ও এক্সের ব্যাংক আকাউন্টও জব্দ করা হয়।
ব্রাজিলের টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অ্যান্টেল’–কে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক্সের সেবা পুনরায় চালু নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার মাসখানেক পর আগস্ট মাসের শেষে মাস্ক কোম্পানির ব্রাজিলীয় কর্মীদের ছাঁটাই করেন এবং ব্রাজিলে এক্সের অফিসটি বন্ধ করে দেন।
সেসময় মাস্ক বলেন, ‘ব্রাজিলে এক্সের অফিস বন্ধ করার সিদ্ধান্তটি কঠিন ছিল।
মাস্ক স্বাধীন মত প্রকাশের বিষয়টিকে সব সময়ই গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন যে, মানুষদের নিজেদের মত প্রকাশের অধিকার থাকা উচিত এবং সে কারণে তিনি অন্যদের মতামত দমনের বিরোধিতা করেন। এ জন্য তিনি মোরায়েসের কয়েক ডজন অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপটিকে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং স্বাধীন মত প্রকাশের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন।
কয়েক দিন পর বিচারপতি মোরাইস পুরো প্ল্যাটফর্মটি দেশের মধ্যে ব্লক করার নির্দেশ দেন। বেশ কিছু ব্যবহারকারী বিকল্প সাইট যেমন ‘ব্লুস্কাই’ ব্যবহার করেন এবং ব্রাজিলে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রোক্সি নেটওয়ার্ক) ব্যবহারের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
গত সেপ্টেম্বর মাসে প্ল্যাটফর্মটি তার আগের সিদ্ধান্ত বদলায় এবং কোর্টের নির্দেশ অনুসরণ করতে শুরু করে।
গত মাসে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি আদালতে জানিয়েছিল, তারা ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধের নির্দেশনা মেনে চলেছে এবং প্ল্যাটফর্মটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা ওঠানোর আবেদন করেছে।
মঙ্গলবার এক্সে বলেছে, তারা ‘ব্রাজিলে ফিরে আসতে পেরে গর্বিত।’ এক্স ব্রাজিলের বিচারকের সকল দাবির মেনে নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
পৃথিবীজুড়ে প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম বৃহত্তম বাজার ব্রাজিল। দেশটির প্রায় ২ কোটিরও বেশি নাগরিক এক্স ব্যবহার করে।