হোম > ফ্যাক্টচেক > বিদেশ

নেতাজি নিজের মৃত্যুসংবাদ পড়ছেন দাবিতে ভাইরাল ছবিটি সম্পাদনা করা

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একটি পত্রিকা পড়ছেন। পত্রিকার প্রথম পাতায় ইংরেজিতে লেখা প্রধান শিরোনামটি বাংলায় অনুবাদ করলে অর্থ দাঁড়ায় এমন—‘জনাব সুভাষচন্দ্র বসু মারা গেছেন।’

সম্প্রতি ফেসবুকে এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি ১৯৪৫ সালের ২৫ আগস্ট তোলা হয়েছিল।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নেতা সুভাষচন্দ্র বসু। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে ভারতকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সেটি নিয়ে রয়েছে রহস্য।

প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট সুভাষচন্দ্র বসু মারা যান। একটি যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে জাপানে মারা যান তিনি। জাপানের তাইপেতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

তবে নেতাজির মৃত্যুর এই তথ্য অনেক ভারতীয়ই বিশ্বাস করেন না। মৃত্যুর সময়ের বা সৎকারের কোনো ছবি পাওয়া না যাওয়ায় অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না যে, ওই বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল।

ভারতীয়দের অনেকেই দাবি করেন, জীবনের শেষ কয়েকটা দিন তিনি গুমনামি বাবার রূপ ধারণ করে ভারতেই ছিলেন। অবশ্য ভারতের বিচার বিভাগ কমিশন গঠন করে রায় দিয়েছে, গুমনামি বাবা নেতাজির ছদ্মরূপ নয়। তবে সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি এখনো আছে। এ নিয়ে এমনকি একাধিক সিনেমাও আছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ‘গুমনামি’ নামে একটি সিনেমাও হয়, যা নতুন করে এই বিতর্ক তুলে দেয়। ভারতের বর্তমান বিজেপি সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার সময় এই রহস্য উন্মোচনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল, যা বলে দেয় জনমনে এ নিয়ে বিদ্যমান রহস্যের মাত্রা ঠিক কতটা।

 

ফ্যাক্টচেক
রিভার্স ইমেজ সার্চে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ছবিটির উৎস খুঁজে পাওয়া যায় ‘অনুজ ধর’ নামের একটি ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে। ভারতীয় লেখক অনুজ ধর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন।

২০১৮ সালের ২৭ মে পোস্ট করা ওই ছবির ক্যাপশনে অনুজ ধর উল্লেখ করেন, নেতাজি জাপানের সবচেয়ে পুরোনো ইংরেজি ভাষার পত্রিকা নিপ্পন টাইমস পড়ছেন। নিপ্পন টাইমস বর্তমানে দ্য জাপান টাইমস নামে পরিচিত।

ওই একই ব্যক্তি ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট তাঁর টুইটার প্রোফাইলে ছবিটিকে সম্পাদনা করে পত্রিকার শিরোনামটি পরিবর্তন করে পোস্ট করেন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টগুলোতে যে ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে, এটিই সেই ছবি।

অনুজ ধর ক্যাপশনে লিখেছেন, মূল ছবি থেকে কল্পনাপ্রসূতভাবে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি তৈরির কৃতিত্ব দিয়ে তিনি বিপ্লব সি২ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টকে ট্যাগ দেন। তবে টুইটারে ওই আইডি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।

অনুজ ধর দাবি করে আসছেন, নেতাজি ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি; বরং স্বাধীনতার পর তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন এবং গুমনামি বাবা ছদ্মবেশে ভারতেই থাকতেন। এ বিষয়ে তিনি চন্দ্রচূড় ঘোষের সঙ্গে যৌথভাবে একটি বইও লেখেন

সিদ্ধান্ত
‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস নিজেই নিজের মৃত্যু সংবাদ পড়ছেন’—ফেসবুকে এমন দাবিতে পোস্ট করা ছবিটি সম্পাদনা করা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

আরব সাগরে সৈন্যসহ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ আটক—ভাইরাল ভিডিওটি পুরোনো

হিজাব খুলে খামেনির বিরুদ্ধে ইরানি নারীদের বিক্ষোভের ভিডিওটি পুরোনো

ইরানের নাগরিকদের জন্য পাকিস্তান সীমান্ত খুলে দিয়েছে—এই দাবির সত্যতা কতটুকু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্টের অফিসে হামলা—ভাইরাল ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

ভাইরাল ভিডিওটি আহমেদাবাদে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার নয়

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার দৃশ্য দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ব্রাজিলের

ইমরান খানের মৃত্যুর দাবিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইরাল বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

ভিডিও গেমের ক্লিপকে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্য বলে পাল্টাপাল্টি দাবি

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে গ্রেপ্তারের ভুয়া খবরটি ছড়িয়েছে এবিপি আনন্দ