ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
তালেবানরা সম্প্রতি আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দেশটি। নানা ছবি, ভিডিও ও তথ্য প্রতি মুহূর্তে আপলোড করা হচ্ছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই পুরোনো, অসত্য বা ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
নাচের ভিডিওটি কাবুল জয়ের নয়, পাকিস্তানের উৎসবের
তালেবানদের কাবুল দখলের পরপরই ফেসবুকে একটি নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়। দাবি করা হয়, এটি আফগানিস্তানের তালেবান সদস্যদের বিজয় উৎসবের ভিডিও। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘কাবুল দখলের পর আফগান জনগণ যখন জীবন বাঁচানোর জন্য দিগ্বিদিক পালাচ্ছে তখন তালেবান জঙ্গিদের উন্মুক্ত ডিজে ড্যান্স।’ ভিডিওটিতে কয়েকজন ব্যক্তিকে অস্ত্র হাতে নাচতে দেখা যায়।
কিন্তু, রিভার্স সার্চে দেখা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়। ‘ডিজে বান্নু ড্যান্স’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি জেলার নাম বান্নু। গত ২৫ মার্চ আপলোড করা ভিডিওটি মূলত পাকিস্তানের পশতু আদিবাসী মারওয়াতদের একটি উৎসবের।
সিরীয় বিদ্রোহীদের ইদলিব শহর দখলের ভিডিও কাবুলের বলে প্রচার
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কিছু সশস্ত্র লোক রাস্তায় সিজদা করছেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘আমি মক্কা বিজয় দেখিনি তবে দেখলাম কাবুল বিজয়। আফগান ও তালেবানের নতুন খবর। ইতিমধ্যে তালেবানেরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গা দখল করে নিয়েছে।’
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল সশস্ত্র লোক অস্ত্র উঁচিয়ে উল্লাস করছে এবং স্লোগান দিচ্ছে। এরপর প্রচুর গুলির শব্দ। ভিডিওর এক অংশে দেখা যায় উঁচু একটি দণ্ড থেকে পতাকা নামানো হচ্ছে। তবে পতাকাটি অস্পষ্ট।
এই ভিডিওটিও সাম্প্রতিক নয়। এমনকি আফগানিস্তানেরও নয়। রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায়, মূল ভিডিওটি ডিইথ্রিটিএনএ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ২৮ মার্চ আপলোড করা হয়। আরবি ভাষায় লেখা ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি সিরিয়ার ইদলিব শহরের হানানো স্কয়ার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দৃশ্য।
তালেবানদের শোকরানা নামাজ আদায়ের ছবি নয় এটি
খোলা মাঠে বেশ কিছু মানুষের নামাজ আদায়ের একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, কাবুল জয়ের পর তালেবানদের শোকরানা নামাজ আদায়ের ছবি এটি।
ক্যাপশন থেকে জানা যায়, আফগানিস্তানের কাবুলের পূর্বে জালালাবাদে একটি মসজিদের বাইরে আফগানরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের ছবি এটি।
মার্কিন সাময়িকী দ্য আটলান্টিকে ২০১২ সালের ২ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও এপির সৌজন্যে ছবিটি প্রকাশিত হয়।