ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ভারতে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন মানুষ হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন।
২ মিনিট ৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ভারতের ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহারকারীদের অনেকেই পোস্ট করে দাবি করছেন, গঙ্গা নদীর পাড়ে আজান দিয়ে নির্জন ওই জায়গাটি দখল করছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা। গঙ্গার তীরে একটি অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করে পরে সেটিকে স্থায়ী আবাসে রূপান্তরিত করাই তাদের লক্ষ্য। অবশ্য হিন্দি ভাষায় লেখা পোস্টগুলোর কোনোটিতেই স্পষ্ট করা হয়নি, ভিডিওতে দেখা যাওয়া এলাকাটি গঙ্গা পাড়ের কোন এলাকায় অবস্থিত।
কেউ কেউ লিখেছেন, পৃথিবীর পরবর্তী যুদ্ধ হবে পানির জন্য, তাই মুসলিমরা পানির তীরেই দখলে নেমেছেন। গঙ্গা নদীর তীর দখলের এই পরিকল্পনার বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো ধারণাই নেই।
ফেসবুকের পোস্টগুলো দেখুন এখানে।
টুইটারের পোস্টগুলো দেখুন এখানে।
ভিডিওটি থেকে আলাদা কয়েকটি ফ্রেমের ক্লিপ নিয়ে গুগল ক্রমের ইনভিড এক্সটেনশন ব্যবহার করে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, ভিডিওটি ডেইলি আজকের নিউজ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৫ মে আপলোড করা হয়। ওই ভিডিওর শিরোনামে লেখা হয়, ‘হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়েই ঈদের জামাত আদায়। এক অন্যরকম ঈদ পালন করলেন আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কয়রার মানুষ।’
ভিডিওর ক্যাপশনের সূত্র ধরে আরও অনুসন্ধান করলে সেসময় প্রকাশিত বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ২৫ মে প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় খুলনার কয়রা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম।
যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে একই দিন এ–সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আপলোড করা হয়। ভারতে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি যে কয়রার ওই ঘটনারই, ওই প্রতিবেদন দেখে সে ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হওয়া যায়।
সিদ্ধান্ত
ভারতে ভাইরাল হওয়া উসকানিমূলক ভিডিওটি পুরোনো। ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও ভারতে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানলে খুলনার কয়রা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা বাঁধ নির্মাণে লেগে পড়েন। ওই কাজের ফাঁকেই ঈদের নামাজ আদায় করেন স্বেচ্ছাসেবীরা।